মাত্র ২% কোভিড ১৯ রোগী জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিমার ক্লেম, গোটা দেশে অভিন্ন চিকিৎসা বিধির দাবি বেসরকারি হাসপাতালগুলোর

ভারতে ১২ হাজার ছাড়িয়েছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। মারা গিয়েছেন ৪০০ র বেশি মানুষ। ভারতে করোনা চিকিৎসার বেশিরভাগই চলছে বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে এবং এইমসে। স্বাভাবিকভাবে মনে হতে পারে করোনাভাইরাস মহামারিতে স্বাস্থ্য বিমার খুব বেশি ভূমিকা নেই। কিন্তু মোট আক্রান্তের অন্তত ১০% মানুষ ভর্তি হচ্ছেন বেসরকারি হাসপাতালে বা নার্সিংহোমেও। সেক্ষেত্রে রোগীদের অন্যতম ভরসার জায়গা বিমা।

সম্প্রতি দ্য ইকনমিক টাইমসে প্রকাশিত প্রতিবেদন বলছে, এখনও পর্যন্ত করোনা আক্রান্তদের মধ্যে মাত্র ২% বিমার দাবি জানিয়েছেন।

ন্যাশনাল হেলথ অথরিটি (NHA) এর এক পদস্থ কর্তা জানান, করোনার ক্ষেত্রে বিমার দাবি করার সংখ্যাটা নিতান্তই কম কারণ, সিংহভাগ কেসের ভার নিয়েছে রাজ্য সরকারগুলি। রোগ ট্র‍্যাক করা থেকে শুরু করে আক্রান্তের পরীক্ষা, চিকিৎসা- সবই হচ্ছে সরকারি হাসপাতালে। তবুও কিছু মানুষ বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাচ্ছেন। আবার এঁদের মধ্যে সীমিত সংখ্যক পজিটিভ কেস বিমার আওতায় পড়েছে। সেই সংখ্যাটা মাত্র ২%।

গত সোমবার জেনারেল ইনসুরেন্স কাউন্সিল (GIC) এক রিপোর্টে জানিয়েছে, দেশে ১০ হাজার ৫৮৬ টি করোনা পজিটিভ কেসের মধ্যে মাত্র ২০০ জন কোভিড-১৯ আক্রান্ত বিমার দাবি করেছেন।

তবে সমস্যা অন্যত্র। এখনও পর্যন্ত সরকারি হাসপাতালগুলোয় বেশিরভাগ করোনা আক্রান্তের চিকিৎসা চললেও, পরবর্তীতে বেসরকারি হাসপাতালও যে রোগীর চাপে উপচে পড়বে না, তার নিশ্চয়তা নেই। তাই এ বিষয়ে পরিষ্কার গাইডলাইনের দাবি জানিয়েছে বিমা সংস্থাগুলোর সংগঠন।

বেসরকারি হাসপাতালের সংগঠন, প্রাইভেট হসপিটালস অ্যান্ড নার্সিং হোমস অ্যাসোসিয়েশন (PHANA) জানাচ্ছে, এই বিষয়ে কোনও অভিন্ন চিকিৎসা প্রোটোকল তৈরি হয়নি। এইমস কিংবা রাজ্য সরকার যদি কোনও পরামর্শ বা গাইডলাইন দেয় তবে তা অনুসরণ করা যেতে পারে। এই প্রেক্ষিতে গত সপ্তাহেই এইমস একটি টাস্ক ফোর্স তৈরি করে, যারা কোভিড-১৯ আক্রান্তদের হাসপাতালে চিকিৎসার একটি অভিন্ন গাইডলাইন দেবে।

এদিকে বিমা কোম্পানিগুলিও GIC এর মাধ্যমে ইনসুরেন্স রেগুলেটরি, ডেভেলপমেন্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (IRDAI) এবং অর্থমন্ত্রকের কাছে একগুচ্ছ প্রস্তাব দিয়েছে, যাতে হাসপাতালগুলি একটি করোনা রোগীদের চিকিৎসায় একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনে চলে।

বর্তমানে প্রাইভেট হাসপাতালগুলিতে করোনা চিকিৎসার খরচ সাড়ে ৪ লক্ষ টাকা থেকে শুরু করে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। যা সামলাতে প্রবল অর্থ কষ্টে পড়বে মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো। এই প্রসঙ্গে একটি বিমা সংস্থার উচ্চপদস্থ কর্তা দ্য ইকনমিক টাইমসকে জানিয়েছেন, তাঁরা পরামর্শ দিয়েছেন ঠিকই কিন্তু কোনও আপডেট আসেনি। কিন্তু বিমার সুরক্ষা পেলেও বেসরকারি হাসপাতালে বিভিন্ন অছিলায় বিল বেশি দেখানোর সমস্যার সমাধান হবে কী করে? এই প্রসঙ্গে ওই বিমা সংস্থার কর্তা স্বীকার করে নেন যদি সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল বিমা সংস্থার পার্টনার না হয় সেক্ষেত্রে অসুবিধে হতে পারে।

এখন যে কোনও বেসরকারি হাসপাতালে কোভিড-১৯ এর টেস্ট করার খরচ সাড়ে চার হাজার টাকা এবং মনে রাখা প্রয়োজন এই পরীক্ষা একবার নয়, চিকিৎসকরা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত একাধিকবার হয়।

Comments are closed.