ডেরেক ও’ব্রায়েন: উত্তরপ্রদেশ, গুজরাতে কেন্দ্রীয় দল নয় কেন? নরেন্দ্র মোদী সরকার যুদ্ধ ঘোষণা করেছে রাজ্যগুলোর বিরুদ্ধে

গোটা বিশ্ব যখন করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে কার্যত প্রাণ বাজি রেখে লড়ছে, তখন নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় সরকার ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়ার বদলে রাজ্যগুলোর বিরুদ্ধেই যুদ্ধ ঘোষণা করছে, মন্তব্য করলেন তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন। রাজ্যে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক দল পাঠানোর বিষয় নিয়ে গত ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলছে বেনজির কেন্দ্র-রাজ্য চাপানউতোর। এবার সেই ইস্যুতে তীব্র প্রতিক্রিয়া দিল রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল।
কেন্দ্রীয় দল যাবে বলে যে জেলাগুলো বেছে নেওয়া হয়েছে সেখানে ৭০-৮০ শতাংশ ক্ষেত্রেই ওই রাজ্যে ক্ষমতায় বিজেপি বিরোধী কোনও শক্তি। উত্তরপ্রদেশ বা গুজরাতের নাম কেন এই তালিকায় নেই? প্রশ্ন ডেরেকের।
তৃণমূলের অন্যতম মুখপাত্র ডেরেক ও’ব্রায়েন এরপরই বলেন, প্রত্যেকটি রাজ্য করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়ছে। আর কেন্দ্র লড়ছে কতগুলো রাজ্যের বিরুদ্ধে। রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই তড়িঘড়ি কেন্দ্রীয় দল পাঠানোকে ডেরেক অভিহিত করেন যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো বিরোধী পদক্ষেপ হিসেবে।
রাজ্যে করোনা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে কেন্দ্রের তরফে দুটি দল পাঠানো হয়েছে। যা নিয়ে গত দু’দিন ধরে কার্যত বিতর্কে জড়িয়েছে দিল্লি-কলকাতা। প্রথমে মুখ্যমন্ত্রী ট্যুইট করে এই পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করেন এবং সাফ জানান, আসার প্রকৃত কারণ রাজ্য প্রশাসনকে না জানালে এ বিষয়ে কোনও রকম সাহায্য করা সম্ভব নয়। সোমবার বিকেলে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যসচিব আরও এক কদম এগিয়ে জানিয়ে দেন, কেন্দ্রীয় দলকে রাজ্যে ঘুরতে দেওয়া হবে না। অভিযোগ জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী চিঠিও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদীকে। কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের সমালোচনা এসেছে বাম-কংগ্রেসের তরফেও। তবে প্রত্যাশিতভাবেই কেন্দ্রের পদক্ষেপ সমর্থন পেয়েছে বিজেপির।
এই পরিস্থিতিতে এবার মুখ খুলল তৃণমূল। মঙ্গলবার ভার্চুয়াল প্রেস মিটে বসেন রাজ্যসভার সদস্য ডেরেক।
কেন্দ্রের দিকে তীব্র কটাক্ষ ছুড়ে দিয়ে ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, রাজনৈতিক মতবিরোধকে সরিয়ে রেখে আমাদের বলতে সমস্যা হয় না যে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় কেরল সরকার বেশ কিছু ভালো কাজ করেছে, ঠিক যেমন বাংলা। এবং অবশ্যই আরও ভালো কাজ করার সুযোগ রয়েছে বাংলার সামনে। তাই কেন্দ্রের সমালোচনা নয়, আমরা এখন কাজের দিকেই নজর দিতে চাই। ভুলে যাবেন না, মার্চের ৫ ও ৬ তারিখ আমরাই সংসদে এই ইস্যু তুলেছিলাম।
ডেরেক বলেন, আমরা যখন বারবার হাত ধুতাম কিংবা পার্লামেন্টে মাস্ক ব্যবহার করতাম, তখন অনেকেই একে গিমিক বলেছিল। আমরা এই প্রশ্ন তুলিনি যে কেন্দ্রের ঘুম ভাঙতে এত দেরি হল কেন। তার কারণ, আমাদের দলনেত্রী এই সঙ্কটের মুহূর্তে রাজনীতি করতে বারণ করেন।
কেন্দ্রের জোড়া পর্যবেক্ষক দলের একটি উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং ও কালিম্পংয়ে যাওয়ার কথা। অন্য দলটির কলকাতা, হাওড়া, উত্তর ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুর যাওয়ার কথা ছিল।

Comments are closed.