‘অহংকার ছাড়ুন, ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিন, না হলে পতন অনিবার্য’, রাজস্থানের টালমাটাল আবহে ইঙ্গিতপূর্ণ ট্যুইটে কাকে বার্তা দীনেশ ত্রিবেদীর?

ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে নিজেদের পরিবর্তন না করলে পৃথিবীই আপনাকে বদলে দেবে। রোমান, গ্রিক, মেসোপটেমিয়ার মতো তাবড় সভ্যতার পতনের অন্যতম কারণ অহংকার।

রাজস্থানে কংগ্রেসের পরিস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে কাঁটাছেড়াকে কটাক্ষ করে সাংবাদিক পল্লবী ঘোষ একটি ট্যুইট করেছিলেন। মূল বক্তব্য ছিল, কংগ্রেসের কী কী ভুল তা বিশ্লেষণ করে দৈনিক সংবাদমাধ্যমে ৫ টি করে প্রবন্ধ পড়তে পড়তে বোর হয়ে যাচ্ছি। আরও অনেক স্টোরি আছে করার মতো। তৃণমূল সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদী সাংবাদিক পল্লবীর সেই ট্যুইটকেই রিট্যুইট করেছেন। এবং তাতে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। তারপরই প্রশ্ন উঠছে, পল্লবী ঘোষের কংগ্রেস সংক্রান্ত ট্যুইটকে রিট্যুইট করে আসলে কাকে বার্তা দিতে চাইলেন মনমোহন জমানার রেলমন্ত্রী দীনেশ ত্রিবেদী?

মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেস সরকার ক্ষমতা হারিয়েছে এবার পুনরাবৃত্তির পথে রাজস্থানও। দুই রাজ্যেই দলের শীর্ষ নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব আর ‘অপারেশন কমল’ এর জেরে সংকটে কংগ্রেস।

এই প্রেক্ষিতেই রবিবার সাংবাদিক পল্লবী ঘোষের ট্যুইট রিট্যুইট করেন তৃণমূল সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদী। লেখেন, ইতিহাস আমাদের অনেক কিছু শেখায়। প্রত্যেকের শেখা উচিত, সময়ের সাথে সাথে যদি নিজে পরিবর্তিত না হন, বিশ্বই আপনাকে বদলে দেবে। এরপরে প্রাচীন রোমান, গ্রীক, মেসোপটেমিয়া সভ্যতার উদাহরণ দিয়ে দীনেশ লেখেন, এগুলি ছিল সময়ের বিচারে সবচেয়ে বড় সাম্রাজ্য এবং সংস্কৃতির পীঠস্থান। তা সত্যেও মুছে গেল কেন? দীনেশের কথায়, ‘অহংকারই এর কারণ? হ্যাঁ, অনেক কারণের মধ্যে এটিও একটি। ভাবুন।’

মধ্যপ্রদেশের পর রাজস্থান। সেখানেও পতনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে কংগ্রেস সরকারের মধ্যে। এদিকে কংগ্রেসের কাঠগড়ায় উঠছে বিজেপির যেন তেন প্রকারে ক্ষমতা দখলের মনোভাব। গান্ধী ব্রিগেডের দাবি, টাকার ঝুলি নিয়ে সরকার ভাঙতে নেমে পড়েছে বিজেপি। এর মধ্যে আবার সোশ্যাল মিডিয়ায় তোলপাড় ফেলেছে একটি অডিও টেপ। যা কংগ্রেসের অভিযোগে অক্সিজেন যুগিয়েছে। কিন্তু প্রমাণ হয়নি সেই বিস্ফোরক অডিও টেপের সত্যতা। এই প্রেক্ষিতে ইতিহাস টেনে পতনের কারণ হিসেবে অহংকারকে চিহ্নিত করে কোন শিবিরকে বার্তা দিলেন সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদী?

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, দীনেশ ত্রিবেদী আসলে ঘুরিয়ে মোদী-অমিত শাহ শিবিরকেই বার্তা দিলেন। তাঁদের দাবি, মধ্যপ্রদেশের পর রাজস্থানেও নির্বাচিত সরকার ফেলায় বিজেপিকেই দোষারোপ করছে কংগ্রেস সহ বিরোধীরা। বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছে, টাকা দিয়ে নির্বাচিত বিধায়ক কিনে সরকার ফেলে দেওয়ার। স্বাভাবিকভাবেই সব অস্বীকার করেছে বিজেপি। কিন্তু অভিযোগ এখনও ভেসে বেরাচ্ছে আকাশে বাতাসে। এই অবস্থায় ইতিহাসকে মনে করিয়ে দীনেশ ত্রিবেদীর সাবধানবাণীকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন তাঁরা।

Comments are closed.