মন্দার দায় চিদম্বরমের, মোদীকে চিঠি লিখে এলাহাবাদের হোটেলে আত্মহত্যা প্রাক্তন বায়ুসেনা আধিকারিকের

দেশের আর্থিক সঙ্কটের জন্য দায়ী পি চিদম্বরম। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উদ্দেশ্য করে লেখা চিঠিতে এমনই অভিযোগ করে আত্মঘাতী হলেন অসমের প্রাক্তন বায়ুসেনা অফিসার।
দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক সঙ্কটের দায় একা মোদী সরকারের নয়। দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক মন্দার জন্য দায়ী প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম ও তৎকালীন ইউপিএ সরকার। তাঁদের কারণেই অবসরের পর নিজের পরিবারের জন্য কিছুই করতে পারেননি। চিঠিতে এমনই লিখে হোটেলের ঘরে আত্মহত্যা করলেন অসমের প্রাক্তন আইএএফ অফিসার বিজন দাস।
গত ৬ সেপ্টেম্বর এলাহাবাদের একটি হোটেলে উঠেছিলেন অসমের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত বায়ুসেনা অফিসার বিজন দাস। দিন তিনেক হোটেলে থাকার পর রবিবার হোটেলের ঘর থেকে প্রাক্তন বায়ুসেনা অফিসারের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। ৫৩ বছরের প্রাক্তন বায়ুসেনা অফিসারের দেহের পাশেই পাওয়া যায় একটি সুইসাইড নোট। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে উদ্দেশ্য করে লেখা সেই সুইসাইড নোটে দেশের সাম্প্রতিক মন্দার জন্য প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমকে দায়ী করা হয়েছে। চিঠিতে লেখা রয়েছে, ইউপিএ আমলের আর্থিক কেলেঙ্কারি ও অর্থনৈতিক অব্যবস্থার জন্য শুধু দেশের অর্থনীতিই নয়, তিনি নিজেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। প্রাক্তন বায়ুসেনা অফিসার বিজন দাস সুইসাইড নোটে লিখেছেন, বর্তমান অর্থনৈতিক দুরবস্থা রাতারাতি তৈরি হয়নি। নোটে দাবি করা হয়েছে, দেশের অর্থনীতিতে নোটবন্দি বা জিএসটি নীতির সাময়িক প্রভাব পড়লেও সেই মন্দার দায় মোদী সরকারের একার নয়। আইএনএক্স মিডিয়া মামলায় চিদম্বরমের জড়ানোর কথারও উল্লেখ রয়েছে চিঠিতে। নিজের অর্থনৈতিক অক্ষমতার কারণে তাঁর ছোট ছেলের জন্য কিছুই করে উঠতে পারেননি বলে দাবি বিজন দাসের। ছেলের গায়ক হওয়ার স্বপ্নপূরণে যেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সাহায্য করেন, সুইসাইড নোটে আবেদন জানিয়েছেন অসমের প্রাক্তন বায়ুসেনা অফিসার।
সুইসাইড নোটের সঙ্গে নিজের শেষকৃত্যের জন্য ১,৫০০ টাকা আর হোটেল ভাড়া হিসেবে ৫০০ টাকা রেখে গিয়েছেন বিজন দাস। চিঠিতে লেখেন, এর চেয়ে বেশি কিছু তিনি রেখে যেতে পারলেন না। পাশাপাশি, তাঁর মৃতদেহ যেন পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া না হয়, এই আবেদনও করা হয় চিঠিতে। লেখা হয়, ছোট্ট সন্তান এ অবস্থায় তাঁকে দেখতে পারবে না। তাই এলাহাবাদ প্রশাসনকেই তাঁর শেষকৃত্যের আয়োজন করতে অনুরোধ করে গিয়েছেন বিজন দাস। তদন্তের স্বার্থে বিজন দাসের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে উত্তর প্রদেশ পুলিশ।

Comments are closed.