গত ১৫ বছরের মধ্যে ২০১৯-২০ তে সবচেয়ে বড় ক্ষতির মুখে দেশের এফএমসিজি সেক্টর, চিন্তায় অর্থনীতিবিদরা

পার্লের, ব্রিটানিয়ার মতো পুরনো বিস্কুট সংস্থাগুলি চাহিদার অভাবে ধুঁকছে। মন্দার জেরে কয়েক হাজার কর্মীকে ছাঁটাইয়ের রাস্তা নিয়েছে পার্লে। এরই মধ্যে সামনে এলো ফাস্ট মুভিং কনজিউমার গুডস (এফএমসিজি) সেক্টরের দুরাবস্থার ছবি। গত ১৫ বছরের মধ্যে ২০১৯-২০ আর্থিক বছরে সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির মুখে পড়েছে এফএমসিজি সেক্টর।
আমেরিকার বিখ্যাত অর্থনৈতিক বিশ্লেষক সংস্থা ক্রেডিট স্যুইসের রিপোর্ট বলছে, গত কয়েকটি ত্রৈমাসিক ধরে নজিরবিহীন মন্দায় ভুগছে ভারতের এফএমসিজি সেক্টর। রাজস্ব বৃদ্ধিতে গত ১৫ বছরের মধ্যে চলতি আর্থিক বছরে সবচেয়ে খারাপ প্রভাব পড়েছে। কৃষিক্ষেত্রে মন্দা, কর্মসংস্থানের অভাব ইত্যাদি অর্থনৈতিক সমস্যার কারণে নজিরবিহীন সমস্যার পড়েছে ফাস্ট মুভিং কনজিউমার গুডস সেক্টর।
ক্রেডিট স্যুইস জানাচ্ছে, গত ১৫ বছরের মধ্যে ২০১৮ সাল থেকে কৃষিক্ষেত্রে টানা আর্থিক বৃদ্ধির হার খারাপ হয়েছে। নোটবন্দি আর জিএসটি নীতি চালুর সময়কালে ছোট ব্যবসায়িক সংস্থাগুলিতে চাপ বেড়েছে। চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে কর্মসংস্থান। সব মিলিয়ে এর প্রভাব পড়েছে এফএমসিজি সেক্টরে। পাশাপাশি, প্রধানমন্ত্রী কিষান সম্মান নিধি প্রকল্পে কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি অর্থ পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রেও প্রত্যাশার চেয়ে অনেক ধীর গতিতে কাজ হচ্ছে। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যে মাত্র ৫০ শতাংশ কৃষক কেন্দ্রের এই আর্থিক সাহায্যের সুবিধা পেয়েছে বলে জানাচ্ছে ক্রেডিট স্যুইস। সংশ্লিষ্ট সংস্থার দাবি, কৃষকরা ঠিক মতো সহায়তা পেলে এক বছরে ২ থেকে ৩ শতাংশ পর্যন্ত এফএমসিজি সেক্টরে বৃদ্ধি হওয়ার কথা।
ক্রেডিট স্যুইসের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ২০১৬ সাল থেকেই ভারতের এফএমসিজি সেক্টরে দুরবস্থা তৈরি হয়। কিন্তু নোটবন্দির পর ২০১৭ সাল থেকে ব্যবসায়িক ক্ষেত্রকে বাধার সম্মুখীন হতে হয়। বিরূপ প্রভাব পড়তে শুরু করে এফএমসিজি সেক্টরে। পাশাপাশি জিএসটি নীতির ফলেও এফএমসিজির রাজস্ব বৃদ্ধি বাধার সম্মুখীন হয় বলে জানাচ্ছে স্যুইস ক্রেডিট। পার্লে বিস্কুট কারখানার সাম্প্রতিক মন্দা পরিস্থিতির জন্যও সংস্থার পদস্থ কর্তা মায়াঙ্ক শাহ জিএসটির হারকে দায়ী করেছিলেন।
এফএমসিজি সেক্টরে বেগ আনতে কৃষকদের জন্য ঠিকঠাক সরকারি সাহায্য, শস্যের ন্যূনতম আয় বৃদ্ধি (এমএসপি), কৃষিক্ষেত্রে জিডিপির উন্নতি এবং সর্বোপরি সরকারি সহযোগিতার প্রয়োজন বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

Comments are closed.