অ্যাটমিক মিনারেলস ডিরেক্টরেট: জলস্তরে বিপুল ইউরেনিয়াম, পরমাণু বোমার উপর বসে তেলেঙ্গানা!

পরমাণু বোমার উপর বসে রয়েছে তেলেঙ্গানা, জলস্তরের মধ্যেই বিপজ্জনকভাবে রয়েছে বিপুল ইউরেনিয়াম। সরকারকে সতর্কবার্তা অ্যাটমিক মিনারেলস ডিরেক্টরেট বা এএমডির। এমনই খবর প্রকাশিত হয়েছে ইংরেজি সংবাদপত্র দ্য ইকনমিক টাইমসে।
অন্ধ্রপ্রদেশের কাডাপা এবং তেলেঙ্গানার নালগোণ্ডা এলাকা ব্যাপক ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ। কিন্তু সেই ইউরেনিয়ামের নাগাল পাওয়া গিয়েছে ভূগর্ভস্থ জলস্তরের মধ্যেই। এবং তা অত্যন্ত বিপজ্জনক মাত্রায়। তেলেঙ্গানার নালগোণ্ডা জেলার লাম্বাপুর-পেড্ডাগাট্টু অঞ্চলের জলস্তর পরীক্ষা করে বিপুল ইউরেনিয়ামের হদিশ পেয়েছে অ্যাটমিক মিনারেলস ডিরেক্টোরেট। এবিষয়ে সরকারি সংস্থাগুলিকে সতর্ক করেছে তারা। এই প্রেক্ষিতে পরমানু শক্তি বিষয়ক বিভাগ, বন ও পরিবেশ মন্ত্রক, জলসম্পদ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ বিভাগ এবং প্রধানমন্ত্রী অফিস (পিএমও) কে সাবধান করেছে এএমডি।
বর্তমানে ইউরেনিয়াম কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া (ইউসিআইএল) অন্ধ্র প্রদেশে ইউরেনিয়াম উত্তোলনের কাজ চালাচ্ছে। তেলেঙ্গানাতেও তিনটি খনি সহ কেন্দ্রীয় প্ল্যান্ট করার জন্য উদ্যোগ নিয়েছে তারা। এর মধ্যেই সামনে এলো এএমডির সতর্কবাণী।
দ্য ইকোনমিক টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পরমানু শক্তি বিভাগের এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, তেলেঙ্গানার লাম্বাপুর-পেড্ডাগাট্টু অঞ্চলে জলস্তরের মধ্যে ভয়ঙ্কর মাত্রায় ইউরেনিয়াম মিলেছে। নমুনায় বিপুল পরিমাণ ইউরেনিয়াম মেলায় ওই অঞ্চলে বসবাসকারী মানুষ ও প্রাণীর স্বাস্থ্য গভীর সঙ্কটে। ইকোনমিক টাইমসের তথ্য অনুযায়ী, সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের ৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাস করেন প্রায় ৩০ হাজার মানুষ। অতি দ্রুত তাঁদের অন্যত্র সরানো না হলে ভয়ঙ্কর বিপদ হতে পারে বলে আশঙ্কা। সম্প্রতি করা সমীক্ষায় উঠে এসেছে, যেখানে ৩০ পিপিবি পর্যন্ত ইউরেনিয়াম জলে থাকলে, সেই জল পান যোগ্য বলে বিবেচিত হয়, সেখানে এই এলাকার জলে ইউরেনিয়ামের পরিমাণ গড়ে ২,৬১৮ পিপিবি। পরীক্ষার জন্য বেছে নেওয়া ২৫ টি কুয়োর মধ্যে মাত্র ৪ টি কুয়োর জলে নির্ধারিত মাত্রায় ইউরেনিয়ামের উপস্থিতি মিলেছে। বাকি সবকটি কুয়োতে ইউরেনিয়ামের উপস্থিতি ভয়াবহভাবে বেশি।

ওই এলাকা মূলত শুখা। তাই চাষবাস থেকে শুরু করে পানীয় জল, মানুষের একমাত্র ভরসা কুয়ো। বিগত কয়েক দশক ধরে এলাকায় বহু কুয়ো খোঁড়া হয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, এলাকার ভূগর্ভস্থ জলে মিশে রয়েছে বিপজ্জনক মাত্রায় ইউরেনিয়াম। যা দীর্ঘদিন ধরেই ব্যবহার করে আসছেন মানুষ। সরকার দ্রুত ওই এলাকার মানুষের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করলে ভয়াবহ বিপদ হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। দীর্ঘদিন ধরে ওই জল ব্যবহারের ফলে ইউরেনিয়াম কৃষ্ণা নদী এবং নাগার্জুন সাগরের জলের উপর কী প্রভাব ফেলেছে, তা নিয়েও গবেষণা চলছে।

Comments are closed.