ভারতের বৈষম্য দূরীকরণে খরচ বৃদ্ধি করতে হবে স্বাস্থ্য এবং শিক্ষা খাতে, বললেন আইএমএফের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা গীতা গোপিনাথ

সদ্য প্রকাশিত হাঙ্গার ইনডেক্সে দেখা গিয়েছে বিশ্ব তালিকার তলানিতে পৌঁছেছে ভারত। আবার ফোর্বস রিচ লিস্টে দেখা যাচ্ছে ভারতের সুপার রিচদের সম্পত্তি বিপুল হারে বাড়ছে। একদিকে মন্দার গ্রাসে ধুঁকছে ভারতের অর্থনীতি, অন্যদিকে জেট গতিতে সম্পত্তি বাড়ছে আম্বানী-আদানিদের।
ইংরেজি নিউজ চ্যানেল এনডিটিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এবার এই বৈষম্যের দিকেই আঙুল তুললেন আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার বা আইএমএফের মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা গীতা গোপিনাথ। সাফ জানালেন, ভারতে সামগ্রিক বৈষম্য দূর করতে না পারলে সাফল্য আসবে না। কীভাবে বৈষম্য দূর হবে, বাতলে দিলেন সেই রাস্তাও।
ভারতের মতো দেশে বৈষম্য দূরীকরণের সেরা অস্ত্র হল শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যে সরকারি খরচ বাড়ানো। এনডিটিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রিন্সটনের প্রাক্তনী তথা হার্ভার্ডের অধ্যাপক গীতা বলেন, সরকার এমন অনেক খরচ করে ফেলছে, যেগুলো লক্ষ্যভ্রষ্ট হচ্ছে। ভর্তুকি দেওয়ার ক্ষেত্রেও এমনটা দেখা যাচ্ছে। অনেক সময় আপনি কত দিচ্ছেন তার থেকেও গুরুত্বপূর্ণ যতটা দিচ্ছেন, তা সঠিকভাবে ব্যবহার হচ্ছে কিনা, বলেন গীতা গোপিনাথ।
সম্প্রতি আইএমএফ ২০১৯ সালে ভারতের বৃদ্ধি ৭ শতাংশ থেকে ৬.১ শতাংশে নামিয়ে এনেছে। তাদের পূর্বাভাস ২০২০ সালে ভারতের বৃদ্ধি ফের ৭ শতাংশ ছুঁতে পারে। অর্থনীতির এই বেহাল অবস্থা কাটিয়ে উঠতে কি ধনীদের উপর করের পরিমাণ বাড়ানো উচিত? এই প্রশ্নের উত্তরে আইএমএফের মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা গীতা গোপিনাথ বলেন, ভারত বরং এখন ভাবার চেষ্টা করুক দেশে ক্রমেই বেড়ে চলা বৈষম্যের অবসান কীভাবে সম্ভব, তা নিয়ে। তারপরই ভারতীয় বংশোদ্ভুত অর্থনীতিবিদ বলেন, বৈষম্য মেটাতে শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যে আরও খরচ করতে হবে। তবে শুধু ভারতই নয়, বিশ্বের আরও বিভিন্ন দেশ একই সমস্যায় ভুগছে বলেও জানিয়েছেন গীতা গোপিনাথ।
কর্পোরেট ট্যাক্স ছাড়ের কেন্দ্রীয় সরকারি সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ দিয়েছেন দিল্লি স্কুল অফ ইকনমিক্সের প্রাক্তনী। তাঁর দাবি, কর্পোরেট ট্যাক্সে ছাড় এবং সেই সংক্রান্ত বিভিন্ন নতুন নতুন নীতির ফলে গ্রামীণ ভারতে আয় বৃদ্ধির একটা সম্ভাবনা তৈরি হবে। যা ভারতের টালমাটাল অর্থনীতির জন্য ভালো সঙ্কেত বলেও মন্তব্য গীতা গোপিনাথের।
একই সঙ্গে তিনি জানান, আইএমএফ ২০১৯ সালের বৃদ্ধি ৬.১ শতাংশ বলে জানালেও ২০২০ সালে ফের ৭ শতাংশ হতে পারে বলে জানিয়েছে। এক বছরের মধ্যে এই বৃদ্ধিকে সামান্য আশাব্যঞ্জক বলে অভিহিত করছেন গীতা গোপিনাথ।
প্রসঙ্গত জুন ত্রৈমাসিকে ভারতের জিডিপি ৬ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন হয়ে দাঁড়ায় ৫ শতাংশে।

Comments are closed.