ওঁলাদের মন্তব্যের প্রভাব পড়তে পারে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কে, আশঙ্কা ফ্রান্সের

ভারতের সঙ্গে রাফাল যুদ্ধ বিমান চুক্তি নিয়ে যে মন্ত্যব্য করেছেন ফ্রান্সের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ফ্রসোঁয়া ওঁলাদে তাতে খারাপ প্রভাব পড়তে পারে দু’দেশের সম্পর্কে। এমনটাই আশঙ্কা করছে বর্তমান ফ্রান্স সরকার। ফ্রান্সের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের অনভিপ্রেত মন্তব্যের ফলে ভারতে রাফাল যুদ্ধ বিমান ইস্যুতে যে রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছে তা মোটেও কাম্য নয়। ফ্রান্সের জুনিয়র বিদেশমন্ত্রী জ্যঁ ব্যপতিস্ত লেম্যয়নে রবিবার জানান, প্রাক্তন ফরাসি প্রেসিডেন্ট যেভাবে একটি বিদেশি রাষ্ট্রের সঙ্গে করা চুক্তি নিয়ে মন্তব্য করেছেন, যা ভারত-ফ্রান্স আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও কূটনৈতিক অবস্থানের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। তা কোনও পক্ষকেই সাহায্য করবে না, ফ্রান্সের পক্ষেও তা ভালো নয়। তিনি আরো বলেন, রাষ্ট্রপতির পদে না থেকেও ওঁলাদে যে মন্তব্য করে বিতর্ক বাঁধিয়েছেন তাতে ভারত-ফ্রান্স সম্পর্কে খারাপ প্রভাব পড়তে পারে ভবিষ্যতে।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার ভারত-ফ্রান্স রাফাল চুক্তি নিয়ে এক ফরাসি সংবাদমাধ্যমে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন সে দেশের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ফ্রসোঁয়া ওঁলাদ। তিনি দাবি করেন, ওই চুক্তির সময় অনিল আম্বানীর সংস্থার নাম ভারত সরকারের তরফেই প্রস্তাব করা হয়েছিল এবং এ নিয়ে অন্য কোনও বিকল্প তাঁদের দেওয়া হয়নি। ভারত সরকারের পক্ষ থেকে ওই একটি সংস্থার নামই জানানো হয়েছিল। তাঁর দাবি, মূল চুক্তির মধ্যে যে ‘অফসেট ক্লজ’ ছিল তার জন্য চুক্তি হয় ফ্রান্সের তরফে ড্যাসল্ট অ্যাভিয়েশন ও ভারতের তরফে অনিল আম্বানীর রিলায়েন্স ডিফেন্সের মধ্যে এবং ভারতের তরফে অন্য কোনও সংস্থার নাম না দেওয়া হওয়ায়, আম্বানীর এই সংস্থার সাথেই দড় কষাকষি করে চুক্তি চূড়ান্ত করে ড্যাসল্ট অ্যাভিয়েশন।
ওঁলাদের এই মন্তব্যের পরে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে ভারত ও ফ্রান্স উভয়ই জানিয়ে দেয়, ওঁলাদের এই মন্তব্যের সাথে তারা সহমত নয়। কারণ ৩৬ টি যুদ্ধ বিমান কেনা, তার সঠিক মান বজায় রাখা ও সরবরাহ ছাড়া, বকি যে চুক্তি ড্যাসল্ট অ্যাভিয়েশন ও রিলায়েন্স ডিফেন্সের মধ্যে হয়েছিল তাতে কোনও সরকারই নাক গলায়নি। ড্যাসল্ট অ্যাভিয়েশনের তরফ থেকেও বলা হয়, তারা নিজেরাই অনিল আম্বানীর সংস্থাকে বেছে নিয়ে, দর কষাকষি করে তাদের সাথে চুক্তি করে। এতে ভারত-ফ্রান্স কোনও সরকারেরই ভূমিকা ছিল না। যদিও আগে থেকেই রাফাল চুক্তিতে দুর্নীতি হয়েছে বলে সরব কংগ্রেস ফ্রসোঁয়া ওঁলাদের এই মন্তব্যের পর হাতে নয়া অস্ত্র পেয়ে গেছে। রাহুল গান্ধী জানিয়েছেন, ১.৩ লক্ষ কোটি টাকার এই চুক্তি আসলে ভারতের নিরাপত্তা বাহিনীর উপর এক সার্জিকাল স্ট্রাইক, যা যৌথভাবে করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও শিল্পপতি অনিল আম্বানী। রাহুলের দাবি, ভারতের আত্মার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা ও সেনার রক্তকে অপমান করেছেন নরেন্দ্র মোদী।

Comments are closed.