গো হত্যার সন্দেহে ফের ঝাড়খণ্ডে গণপিটুনিতে মৃত্যু, প্রাণের ঝাড়খণ্ড এখন দেশের লিঞ্চিস্তান, তোপ বৃন্দা কারাটের

ফের গণপিটুনিতে গেল প্রাণ। এবারও ঘটনা সেই ঝাড়খণ্ডেই। চলতি বছর জুনেই তাবরেজ আনসারি নামে এক যুবককে পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠেছিল। এবার গো-হত্যার সন্দেহে ৩ জনকে গণপিটুনি দেওয়ার অভিযোগ উঠল ঝাড়খণ্ডের খুন্তি জেলায়। এঁদের মধ্যে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর।
রবিবার সকালে খুন্তির জলতাণ্ডা সুয়ারি গ্রামে গো-হত্যার অভিযোগে কালান্তুস বার্লা, ফিলিপ হোরো ও ফাগু কাচ্চাপ নামে ৩ ব্যক্তিকে বেধড়ক মারধর করে স্থানীয়রা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছোয় পুলিশ। ৩ জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় কালান্তুস বাড়লার। বাকি দু’জনের অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানিয়েছেন ছোটনাগপুর রেঞ্জের ডিআইজি।
যদিও গণপিটুনির ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। ইংরেজি দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফের রিপোর্ট অনুযায়ী, গণপিটুনির কোনও সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পায়নি পুলিশ। তবে একটি স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। মোট ৭ জনকে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই ৩ ব্যক্তি নিষিদ্ধ মাংস বিক্রি করছেন, এই সন্দেহে তাদের উপর চড়াও হয় কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা। বেধড়ক মারধর করা হয়। রাঁচির আরআইএমএস হাসপাতালের এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, হাসপাতালে পৌঁছনোর আগেই মৃত্যু হয় কালান্তুস বার্লা নামে বছর ৩৮-এর এক ব্যক্তির। ময়নাতদন্তের পর তাঁর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। পাশাপাশি, বার্লার বাকি ২ সঙ্গীর শরীরে বিভিন্ন জায়গায় গভীর ক্ষত রয়েছে বলে জানান ওই চিকিৎসক।
চুরি-ছিনতাই ও পাচারকারী সন্দেহে সেপ্টেম্বরেই অন্তত ৩ টি ঘটনা ঘটেছে ঝাড়খণ্ডে। ইংরেজি দৈনিক দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের রিপোর্ট অনুযায়ী, ঝাড়খণ্ডে গত ৩ বছরে ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে কেবলমাত্র গণপিটুনিতে।

এই ঘটনার পর মুখ খুলেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। সিপিএম নেত্রী বৃন্দা কারাটের দাবি, ঝাড়খণ্ডে যে আইন শৃঙ্খলা বলে কিছু নেই, তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। সরকার পরিষ্কার করে দিয়েছে, যে তারা নিগ্রহের শিকারদের পরিবারের সঙ্গে নয় বরং গণপিটুনির কুশীলবদের পাশে রয়েছে। আর এভাবেই দিকে দিকে বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে, আমাদের প্রাণের ঝাড়খণ্ড এখন প্রকৃতপক্ষেই লিঞ্চিস্তান হয়ে উঠেছে। অভিযোগ সিপিএম পলিটব্যুরো সদস্যের।

Comments are closed.