কমছে বিক্রি, বিস্কুট প্রস্তুতকারী পার্লে সংস্থায় কাজ হারাতে পারেন ১০ হাজার কর্মী, জিএসটি হার কমানোর দাবি

গাড়ি শিল্পের প্রবল মন্দার জেরে অটোমোবাইল সেক্টরে নাগাড়ে চলছে কর্মী ছাঁটাই। এরই মধ্যে ফাস্ট-মুভিং কনজিউমার গুডস (এফএমসিজি) সেক্টরের দুরাবস্থার ছবি সামনে এলো। দেশের বৃহত্তম বিস্কুট তৈরির সংস্থা ‘পার্লে’ জানিয়েছে, সাম্প্রতিক মন্দার জেরে সংস্থার ৮ থেকে ১০ হাজার কর্মীর কাজ যেতে পারে।
মঙ্গলবার পার্লে সংস্থার পদস্থ কর্তা ময়াঙ্ক শাহ জানান, জিএসটির হার না কমলে ব্যবসা বাঁচাতে দেশের বিভিন্ন কারখানা থেকে ৮ হাজার থেকে ১০ হাজার কর্মী ছাঁটাইয়ের রাস্তা নিতে বাধ্য হবেন তাঁরা।
প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার ব্যবসাকারী বিস্কুট কোম্পানির পার্লে-জি, মোনাকো, মারি ইত্যাদি বিস্কুট দেশে প্রবল জনপ্রিয়। ১৯২৯ সালে তৈরি হওয়া পার্লে সংস্থায় প্রায় ১ লক্ষ কর্মচারী কাজ করেন। কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে লাগাতার ব্যবসা কমার ফলে ক্ষতির মুখে পড়েছে দেশের বৃহত্তম বিস্কুট তৈরির সংস্থাটি। এই প্রেক্ষিতে পার্লে দায়ী করেছে, কেন্দ্রের লাগু করা জিএসটি হারকে। প্রত্যেক ১০০ কেজি বিস্কুটে ১২ শতাংশ হারে কর দিতে হত পার্লের মতো সংস্থাকে। এই সংস্থাগুলির আশা ছিল, অন্যান্য বিস্কুটে ১২ শতাংশ হারে জিএসটি লাগু হলেও, কম দামি ছোট বিস্কুট প্যাকেটের জন্য যেন ৫ শতাংশ জিএসটি ধার্য করা হয়। কিন্তু ২ বছর আগে বিজেপি সরকার জিএসটি চালু করার পর সব রকম বিস্কুটেই ১৮ শতাংশ কর চাপানো হয়। যার ফলে বিস্কুটের দাম বাড়াতে বাধ্য হয় পার্লের মতো অনেক সংস্থা। কিন্তু এর পরেই সংস্থার বিক্রি কমতে শুরু করে বলে দাবি পার্লের। একই অভিযোগ করেছেন ব্রিটানিয়ার ম্যানেজিং ডিরেক্টর বরুণ বেরিও। তিনি সাম্প্রতিক অর্থনীতির বেহাল অবস্থা বোঝাতে গিয়ে বলেন, এখন ৫ টাকার বিস্কুট প্যাকেট কিনতেও দু’বার ভাবছেন ক্রেতারা। পার্লের ময়াঙ্ক শাহের কথায়, তাঁদের বেশিরভাগ প্রোডাক্টই তৈরি মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত ক্রেতাদের কথা ভেবে। কিন্তু জিএসটি লাগু হওয়ার পর থেকেই তাঁদের বিক্রি কমতে থাকে বলে অভিযোগ ময়াঙ্ক শাহের।
নিয়েলসন তথ্য অনুযায়ী, গত ৪ টি ত্রৈমাসিক ধরেই এফএমসিজি সেক্টরে মন্দা তৈরি হয়েছে। ২০১৮ সালের জুলাই-সেপ্টেম্বর ত্রৈমাসিক থেকে এই দুরাবস্থা চলছে এফএমসিজি সেক্টরে। গ্রাম বা শহর সব জায়গাতেই এফএমসিজি প্রোডাক্টের বিক্রি কমছে বলে জানাচ্ছে বাজার বিশেষজ্ঞ ফার্ম।
অন্যদিকে, পার্লের তরফে ময়াঙ্ক শাহ জানিয়েছেন, সংস্থার এই ঘোর সঙ্কটের সময় যদি দ্রুত সরকারি পদক্ষেপ না হয়, তবে শীঘ্রই কাজ হারাবেন প্রায় ১০ হাজার কর্মী।

Comments are closed.