সরকারি কর্মীদের বেতনের ২৫ শতাংশ পর্যন্ত কাটতে অর্ডিন্যান্সের রাস্তায় কেরলের সিপিএম সরকার!

করোনাভাইরাস মোকাবিলায় কোষাগারে ধাক্কা সামলাতে অর্ডিন্যান্স জারি করে রাজ্যের সরকারি কর্মীদের মাসিক বেতনের ২৫ শতাংশ অংশ পর্যন্ত আপাতত কেটে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল কেরলের সিপিএম সরকার।
রাজ্যে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় পিনারাই বিজয়ন সরকারের এই সিদ্ধান্ত। কেরলের অর্থমন্ত্রী টমাস আইজ্যাক জানিয়েছেন, জরুরি পরিস্থিতিতে রাজ্যের সমস্ত সরকারি কর্মীর বেতনের ২৫ শতাংশ পর্যন্ত কেটে বাকিটা দেওয়া হবে প্রতি মাসে। আগামী ৫ মাস চলবে এই প্রক্রিয়া।
গত ২৩ এপ্রিল কেরল সরকারের তরফে এক নির্দেশিকা জারি করে জানানো হয়, করোনার উদ্ভুত পরিস্থিতিতে আগামী পাঁচ মাস ধরে রাজ্য সরকারি কর্মীদের প্রতি মাসে ৬ দিনের বেতন কেটে রাখা হবে। রাজ্য সরকারি ও সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত সংস্থাগুলি, যেখানে কর্মীর বেতন ২০ হাজার টাকার বেশি, তাদের ক্ষেত্রে এই নিয়ম চালু  হচ্ছে বলে জানানো হয়।
ওই নির্দেশে আরও বলা হয়েছিল, মন্ত্রী, বিধায়ক ও বিভিন্ন বোর্ডের সদস্য, স্থানীয় সংস্থার সদস্য, বিভিন্ন কমিশনের সদস্য আগামী এক বছর তাঁদের বেতনের ৩০ শতাংশ কম পাবেন।
এ নিয়ে আদালতে মামলা করে সরকারি কর্মীদের একাংশ। কয়েকদিন আগে কেরল হাইকোর্ট সরকারি কর্মীদের বেতন কাটার নির্দেশে আইনি বৈধতা নেই বলে স্থগিতাদেশ দেয়।
এই প্রেক্ষিতে রাজ্যপালের মাধ্যমে অর্ডিন্যান্স জারি করে সরকারি কর্মীদের বেতন কাটার রাস্তা নিল কেরল সরকার। কেরলের অর্থমন্ত্রী টমাস আইজ্যাক বলেন, হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ মেনে নিয়ে এই অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে আমাদের সিদ্ধান্ত আইনি বৈধতা পাবে। আমরা বেতন স্থগিত করতে পারব। আগামী ছয় মাসের মধ্যে ধাপে ধাপে সরকারি কর্মীদের সেই বেতন পরিশোধ করে দেওয়া হবে। জানা গিয়েছে, ২৫ শতাংশ বেতন আটকে তা পরে প্রতি মাসে পরিশোধ করা হবে। কেরলের অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের হাতে পর্যাপ্ত রাজস্ব নেই। আর কোনও বিকল্পও নেই। পেনশন সহ রাজ্য সরকারি কর্মীদের বেতন মেটানোর জন্য কেন্দ্রীয় বরাদ্দ যথেষ্ট নয়। অন্য রাজ্যগুলোর মত আমরা কিন্তু বেতন সঙ্কোচন করছি না। শুধু কয়েকদিনের বেতন মুলতুবি রাখছি। সরকারি সূত্রে খবর, এই সিদ্ধান্তের ফলে কোষাগারে ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা রাজস্ব বাঁচবে। ওই অর্থ বিপর্যয় মোকাবিলায় মুখ্যমন্ত্রীর বিপর্যয় মোকাবিলা তহবিলে বরাদ্দ করা হবে।

Comments are closed.