‘কেউ তো সঠিক প্রশ্ন করলেন’, নাম না করে অর্ণব গোস্বামীকে কটাক্ষ মহুয়া মৈত্রর! মামলা প্রক্রিয়ায় নিয়মভঙ্গ? চিঠি আইনজীবী

সোনিয়া গান্ধী সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্য, রাহুল গান্ধীর বক্তব্য বিকৃত করা এবং পালঘরের ঘটনা নিয়ে বিদ্বেষমূলক কথা বলার অভিযোগে রিপাবলিক টিভির প্রধান সম্পাদক অর্ণব গোস্বামীর বিরুদ্ধে দেশের একাধিক রাজ্যে মামলা দায়ের করেছিল কংগ্রেস। যার জেরে গত ২৩ এপ্রিল অর্ণব গোস্বামী সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। রিপাবলিক টিভির এডিটর ইন চিফ তাঁর বিরুদ্ধে হওয়া সমস্ত এফআইআর খারিজ করার আর্জি জানান শীর্ষ আদালতে।
আর এই আর্জি জানানোর প্রক্রিয়া এবং তার শুনানি নিয়েই এখন শুরু হয়েছে বিতর্ক। প্রশ্ন উঠছে, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মামলা যখন সময়ের অভাবে এজলাসে প্রবেশ করতে দিন গুনছে, তখন এক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া এফআইআর খারিজ করার আর্জি সাত তাড়াতাড়ি বিচারের কাঠগড়ায় পৌঁছয় কীভাবে? সম্প্রতি এই সংক্রান্ত একটি চিঠি লিখে সুপ্রিম কোর্টের সেক্রেটারি জেনারেলের কাছে জবাব চেয়েছেন শীর্ষ আদালতের বারের সদস্য আইনজীবী জয় অনন্ত দেহাদ্রাই। আর ট্যুইটে সেই চিঠি শেয়ার করে নাম না করে অর্ণব গোস্বামী কটাক্ষ করলেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র।
কিছুদিন আগেই তৃণমূলের পক্ষ থেকে রিপাবলিক টিভির সমালোচনা করে বলা হয়েছিল, এই চ্যানেলে এক ব্যক্তিকে তৃণমূলের প্রতিনিধি সাজিয়ে শোয়ে বসানো হয়েছিল, যাঁর সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই। সেই ঘটনায় এই চ্যানেলের সমালোচনা করেছিলেন মহুয়া মৈত্রও।

সুপ্রিম কোর্টের সেক্রেটারি জেনারেল কালগাঁওকরের কাছে জয় অনন্ত দেহাদ্রাই জানতে চেয়েছেন, যে পদ্ধতিতে অর্ণব গোস্বামীর মামলাটি এজলাসে পাঠানো হয়েছে, তা কোন নিয়মে করা হল? সাধারণ ক্ষেত্রে যা করা হয়, এক্ষেত্রে কি অন্য পথ নেওয়া হয়েছিল? যদি অন্য পথ নেওয়া হয়, তাহলে আপনি সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে তদন্ত কমিটি বসিয়ে তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন কি? নাকি আপনি ঘটনার দায়ভার নিজের কাঁধে নিচ্ছেন? অর্ণব গোস্বামীর আর্জিকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে নথিভুক্ত করেছেন যে আধিকারিকরা, তাঁদের নাম কী?
চিঠিতে জয় দেহাদ্রাই উল্লেখ করছেন, সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইট বলছে ২৩ এপ্রিল রাত ৮ টা বেজে ৭ মিনিটে অর্ণব গোস্বামীর মামলাটি ফাইল হয়। তার ঠিক এক ঘণ্টা পর রাত ৯ টা বেজে ৭ মিনিটে মামলাটি পরের দিনেরই লিস্টিংয়ের জন্য বাছা হয়। আইনজীবীর প্রশ্ন, এক্ষেত্রে কি ১৫ এপ্রিলের স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর মানা হয়েছিল? আইনজীবীর সন্দেহ, তা হয়নি। তিনি বলছেন, এসওপি অনুযায়ী কোনও মামলা বিকেল ৫ টার মধ্যে দায়ের হলে তা স্বাভাবিকভাবেই ২ দিন পরের ডেটের জন্য বিবেচিত হয়। তাহলে অর্ণব গোস্বামীর মামলা কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল যে, তা রাত ৮ টায় দায়ের হলেও পরদিন সকালে তার শুনানি হয়, প্রশ্ন দেহাদ্রাইয়ের। তাহলে কি এখানে নিয়ম বিরুদ্ধ কিছু হয়েছে? আইনজীবী দেহাদ্রাই চিঠিতে আরও লিখেছেন, মামলার লিস্টিংয়ের ব্যাপারে বিচারপতিদের কিছুই জানার উপায় থাকে না। কারণ গোটা ব্যাপারটিই আপনার হাতে ন্যস্ত।
এবার আইনজীবীর সেই চিঠিকেই হাতিয়ার করে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তুললেন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ। নাম না করে রিপাবলিক টিভির প্রধান কর্ণধারকে কটাক্ষ করলেন। অর্ণব গোস্বামীর সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার প্রক্রিয়া নিয়েও প্রশ্ন তুললেন তৃণমূল সাংসদ।

Comments are closed.