৪ নেতা মন্ত্রীর জামিনের দিনই মোদী শুভেন্দু পাশাপাশি, কী বার্তা?

একই দিনে দুই ঘটনার রাজনৈতিক তাৎপর্য কী, তা নিয়ে জোর চর্চা শুরু

কলকাতা হাই কোর্টের বিশেষ বেঞ্চ শুক্রবার রাজ্যের দুই মন্ত্রী সুব্রত মুখার্জি, ফিরহাদ হাকিম, তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র এবং কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চ্যাটার্জির অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর করেছে। স্থানান্তর সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে সোমবার পরবর্তী শুনানি। এদিকে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অরিন্দম সিনহার ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিকে দেওয়া চিঠি গোটা ঘটনায় নয়া মাত্রা যোগ করেছে। এই প্রেক্ষিতে কলাইকুন্ডায় প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে বৈঠক করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি আবার নারদ মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত। বিজেপি রাজ্য দফতরে নারদের যে ফুটেজ দেখানো হয়েছিল, তাতে টাকা নিতে দেখা গিয়েছিল শুভেন্দু অধিকারীকেও। একই দিনে দুই ঘটনার রাজনৈতিক তাৎপর্য কী, তা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে।

১৭ মে সাত সকালে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে বাড়ি ঘিরে ফেলে গ্রেফতার করা হয় রাজ্যের দুই মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র এবং কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চ্যাটার্জিকে। সেই গ্রেফতার নিয়ে তোলপাড় পড়ে যায় রাজ্যে। প্রশ্ন উঠতে শুরু করে, তাহলে কি এরপর মুকুল রায়, শুভেন্দু অধিকারীর পালা? কিন্তু দেখা যায় তা হল না। তখন প্রশ্ন উঠেছিল, একই ধারায় অভিযুক্ত শুভেন্দু অধিকারী এবং মুকুল রায় গ্রেফতারি এড়ালেন কোন মন্ত্রে? তাঁরা বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন বলেই কি গ্রেফতারি থেকে ছাড় পেলেন?

কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা অবশ্য জানিয়েছিল, লোকসভা এবং রাজ্যসভার তরফে অনুমতি আটকে আছে। তাই এই দু’জনের বিরুদ্ধে এখনও চার্জশিট পেশ করতে পারেনি সিবিআই। একই কারণে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়নি।

সিবিআই টেকনিক্যাল যুক্তি দিলেও বিজেপিতে যোগ দেওয়াতেই শুভেন্দু-মুকুল গ্রেফতারি থেকে বাঁচলেন কিনা তা নিয়ে চর্চা অব্যাহত। বলা ভাল, গ্রেফতারি এড়াতেই কি তাঁরা বিজেপিতে? এই জল্পনা আরও গতি পেয়েছে ৪ হেভিওয়েটের জামিন মঞ্জুর-স্থগিত-আবার মঞ্জুরের ঘটনা প্রবাহের জেরে।

এই আবহে প্রধানমন্ত্রীর পাশে দেখা গেল শুভেন্দু অধিকারীকে। যে ছবিকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। পাশাপাশি বিজেপির একটি অংশের দাবি, এই সমাপতন নেহাতই কাকতালীয়। হাই কোর্টের আজকের রায়ের সঙ্গে মোদী-শুভেন্দু বৈঠককে এক সরলরেখায় আনা যাবে না। সিবিআই একটি পেশাদার গোয়েন্দা সংস্থা এবং শুভেন্দু অধিকারী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, উভয়ের ক্ষেত্রেই আইন চলবে নিজ পথে। পাল্টা তৃণমূলের প্রশ্ন, সুব্রত, ফিরহাদ, মদনের অন্তর্বর্তী জামিনের দিন দেশের প্রধানমন্ত্রী মিটিং করছেন নারদায় অন্যতম অভিযুক্তের সঙ্গে, যাঁকে ছুতেও পারেনি সিবিআই। এতেই কি সব পরিষ্কার নয়? এই প্রেক্ষিতে মনে করা যেতে পারে গ্রেফতার হওয়ার পর মদন মিত্রের মন্তব্য। সিবিআই অফিস থেকে বেরিয়ে মদন মিত্র বলেছিলেন, ‘আমরা খারাপ, শুভেন্দুরা ভাল’!

Comments are closed.