দাউদকে পাকিস্তানে পালাতে কে সাহায্য করেছে জানতে পারবেন শীঘ্রই, বললেন মোদী! দাউদ ঘনিষ্ঠ-প্রফুল প্যাটেল যোগ নিয়ে জল্পনা

লোকসভা নির্বাচনের প্রচার চলাকালীন পুলওয়ামার জঙ্গি হানা এবং বালাকোট এয়ার স্ট্রাইককে হাতিয়ার করে জাতীয়তাবাদের ঝড় তুলে বিরোধীদের জনবিচ্ছিন্ন করার কৌশল নিয়েছিল নরেন্দ্র মোদী। সামনেই মহারাষ্ট্র সহ একাধিক রাজ্যে বিধানসভা ভোট। এবার কি প্রচারে বিজেপির ব্রহ্মাস্ত্র হতে চলেছে দাউদ ইব্রাহিম?
মহারাষ্ট্রে বিজেপির মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা কংগ্রেস-এনসিপি জোটের সঙ্গে। এই প্রেক্ষিতেই ফের প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠলেন মুম্বই বিস্ফোরণে মুখ্য অভিযুক্ত পলাতক মাফিয়া ডন দাউদ ইব্রাহিম। দাউদ ঘনিষ্ঠ ইকবাল মির্চির সঙ্গে বেআইনি আর্থিক লেনদেনের অভিযোগে শরদ পাওয়ারের এনসিপি’র অন্যতম শীর্ষ নেতা প্রফুল প্যাটেলকে সম্প্রতি নোটিস ধরিয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। যদিও ২০১৩ সালে লন্ডনে মৃত ইকবাল মির্চির সঙ্গে কোনওরকম বেআইনি আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন ইউপিএ আমলের অসামরিক বিমান পরিবহণমন্ত্রী প্রফুল প্যাটেল। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, যেভাবে লোকসভার আগে পুলওয়ামার ঘটনাকে নিজেদের ভোটে জেতার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছিল বিজেপি, তেমনই মহারাষ্ট্রের ভোটের আগে তাদের হাতিয়ার দাউদ।
এই পরিস্থিতিতে মহারাষ্ট্রে প্রচারে গিয়ে মোদী তাঁর ভাষণে টেনে এনেছেন দাউদ ইব্রাহিমের নাম। যাকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। বৃহস্পতিবার মহারাষ্ট্রের আকোলায় নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে উপস্থিত জনতাকে মোদী প্রশ্ন করেন, ১৯৯৩ সালের মুম্বইয়ে ধারাবাহিক বিস্ফোরণের মূল চক্রীরা কাদের মদতে দেশ থেকে পালিয়েছিল, জানেন আপনারা? তারপর নিজেই বলেন, আর কিছুদিন অপেক্ষা করুন। ধারাবাহিক বিস্ফোরণের মূল চক্রীরা কাদের সাহায্যে পাকিস্তানে পালাতে সক্ষম হয়েছিল, তা প্রকাশ্যে চলে আসবে। আপনারা জানতে পারবেন, কাদের মদতে পাকিস্তানের মাটিতে মুম্বই বিস্ফোরণের মূল চক্রীরা আশ্রয় পেয়েছিল।
কারও নাম না করলেও মোদীর নিশানা যে তৎকালীন শরদ পাওয়ার সরকারের দিকেই, তা স্পষ্ট। মহারাষ্ট্রের বিরোধী দলের অন্যতম নেতার বিরুদ্ধে যখন দাউদ ঘনিষ্ঠের সঙ্গে বেআইনি আর্থিক লেনদেনে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগে নোটিস পাঠাচ্ছে ইডি, ঠিক তখনই নির্বাচনী প্রচারে সে রাজ্যে গিয়ে নরেন্দ্র মোদীর মুম্বই বিস্ফোরণের অস্ত্রে শান দেওয়াকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে দেখতে রাজি নন বিরোধীরা। তাদের অভিযোগ, মুম্বই বিস্ফোরণের ঘটনার সঙ্গে বিরোধীদের যোগসূত্র প্রতিষ্ঠা করে নির্বাচনে ডিভিডেন্ড তুলতে চাইছে বিজেপি।
শরদ পাওয়ারের ইডি দফতরে হাজিরা দেওয়া নিয়ে সম্প্রতি বিস্তর নাটক চলে মুম্বইয়ে। আইনশৃঙ্খলার কথা মাথায় রেখে এখনই ইডি দফতরে যাবেন না বলে জানিয়ে দেন এনসিপি সুপ্রিমো। রাজ্যে ভোটের আগে এবার ইডির টার্গেটে প্রফুল প্যাটেল? মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে এখন এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। বিশেষ করে নির্বাচনী জনসভায় দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী যখন দাউদ ইব্রাহিম এবং মুম্বই বিস্ফোরণ প্রসঙ্গ তুলে বিরোধীদের আক্রমণ করছেন, তা এই অভিযোগে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

Comments are closed.