এরিয়ানের কাছে ১-২ গোলে হার, কলকাতা লিগে অনেকটাই পিছিয়ে পড়ল মোহনবাগান

ফুটবলে কোনও কিছুই যে নিশ্চিত নয় সেটাই আরও একবার প্রমাণ হয়ে গেল বৃহস্পতিবার। এদিন কল্যাণীতে এরিয়ানের মুখোমুখি হয় মোহনবাগান। প্রাথমিকভাবে ধরেই নেওয়া হয়েছিল ম্যাচ জিতে এগিয়ে যাবে মোহনবাগান। চাপ বাড়বে পিয়ারলেসের উপর। অথচ হল ঠিক উল্টোটা। এরিয়ানের কাছে ২-১ গোলে পরাজিত হয় কিবু ভিকুনার দল।
সকাল থেকেই একটানা বৃষ্টি হয়েছে কল্যাণীতে। উপর থেকে সবুজ মাঠ মনে হলেও, ঘাসের নীচে জমা জলে বারবার আটকে যাচ্ছিল বল। তাছাড়া কাদা মাঠে শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখতে বেশ অসুবিধে হচ্ছিল খেলোয়াড়দের। প্রথম থেকেই আজ ছন্নছাড়া ফুটবল খেলছিল কিবু ভিকুনার দল। ১১ মিনিটের মাথায় পেনাল্টি বক্সের মধ্যে ইন্ডিরেক্ট ফ্রিকিক পায় মোহনবাগান। এরিয়ান ডিফেন্ডারের ব্যাকপাস সোজা চলে যায় গোলকিপার আব্দুল কাদিরের হাতে। কিন্তু জোসেবা বেইতিয়ার ফ্রিকিক ক্লিয়ার করে দেন এরিয়ান ডিফেন্ডার। ম্যাচের ২৫ মিনিটে এরিয়ান ডিফেন্ডার কাদায় ব্যালান্স হারালে ফাঁকা জায়গা পেয়ে যান সালভা। কিন্তু সহজ সুযোগ মিস করেন তিনি।
সেকেন্ড হাফের শুরুতেই খেলার গতি বাড়ানোর জন্য ব্রিটোকে মাঠে নামান স্প্যানিশ কোচ। কিন্তু তাতেও বিশেষ কোনও লাভ হয়নি। ৬১ মিনিটে কাউন্টার অ্যাটাকে যায় এরিয়ান। কুটির থেকে বল পেয়ে মাঝমাঠ থেকে করা ডায়োমান্ডের দুরন্ত শটে বেশ কিছুটা এগিয়ে থাকা দেবজিৎ অসহায় হয়ে পড়েন। বল জড়িয়ে যায় জালে। গত বছর এরিয়ানে ছিলেন আইভরি কোস্টের ডায়োমান্ডে। এই বছর প্রথম থেকে না থাকলেও দিন দুই আগে সই করেছিলেন তিনি। মাঠে নেমেই প্রথম ম্যাচে নায়ক হয়ে যান। এরপর ৭৮ মিনিটে কুণাল ঘোষের ফ্রি কিক থেকে জালে বল জড়িয়ে দেন সন্দীপ ওঁরাও। ম্যাচের ফলাফল দাঁড়ায় ২-০। পরিবর্ত হিসাবে নামা শুভ ঘোষ নজর কাড়ছিলেন। ৮৯ মিনিটে শুভ ঘোষের হেডে করা গোলে ব্যবধান কমায় মোহনবাগান। এরপর অতিরিক্ত সময়ে তাঁর শট পোস্টে লেগে ফিরে আসে। কিন্তু এদিন অতিরিক্ত সময়ের বেশিরভাগটাই এরিয়ান গোলকিপার শুয়ে কাটিয়ে দেন। সময় নষ্ট করার অভিযোগে রেফারিকে টার্গেট করে মোহনবাগান সমর্থকরা বোতল এবং ইঁট ছুঁড়তে থাকেন। কড়া পুলিশি পাহারা দিয়ে মাঠ থেকে বের করে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে।
এদিনের দলের পারফরম্যান্স নিয়ে হতাশ ভিকুনা বলেন, ‘এখন পরিস্থিতি খুব কঠিন। আমরা ভীষণ হতাশ।’ অন্যদিকে মোহনবাগানকে আটকে দেওয়ার পিছনে বাবা রঘু নন্দী এবং ছেলে রাজদীপ নন্দী। এই জুটির সামনেই হার মেনেছে স্প্যানিশ স্ট্র্যাটেজি। দশ দিন আগেই বি.এস.এস ছেড়েছেন রঘু নন্দী। তাঁর কথায়, দুজন ফুটবলার দিয়ে যেই বেইতিয়াকে আটকে দিলাম অমনি মোহনবাগান আটকে গেল। পাশাপাশি রাজদীপ নন্দী জানালেন, যা করার বাবাই করেছেন। মোহনবাগান অনেক হাল্কাভাবে নিয়েছিল ম্যাচটা। এদিনের হারের ফলে সবুজ মেরুন ব্রিগেডের ঝুলিতে এখন ৭ ম্যাচ খেলে ১১ পয়েন্ট। বাকি দলগুলোর থেকে অনেকটাই পিছিয়ে পড়ল মোহনবাগান।

Comments are closed.