কালো টাকা এবং বেনামি সম্পত্তি উদ্ধারের দায়িত্ব এবার দেশের সাধারণ মানুষের হাতেই ছাড়ল নরেন্দ্র মোদী সরকার। কালো টাকা ও বেনামি সম্পত্তি উদ্ধার এবং বিদেশ থেকে তা দেশে ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে মোদি সরকার ব্যর্থ বলে বিরোধীরা লাগাতার প্রচার চালাচ্ছে। ২০১৪ লোকসভা ভোটের প্রচারে বিদেশ থেকে কালো টাকা ফিরিয়ে প্রত্যেক দেশবাসীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১৫ লাখ টাকা দেবেন বলে নরেন্দ্র মোদী যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তারও জবাব প্রধানমন্ত্রীর কাছে চেয়েছেন বিরোধীরা। কিন্তু চার বছরে তার কোনও সুদুত্তর দিতে পারেনি কেন্দ্রীয় সরকার। একদিকে বিরোধীদের চাপ, অন্যদিকে দেশের জনগনের কাছে মুখ রক্ষার দায়, এবার কালো টাকা ও বেনামি সম্পত্তির হদিশ পেতে নয়া প্রকল্প আনল কেন্দ্র। এই প্রকল্পে থাকছে সাধারণ মানুষের রাতারাতি কোটিপতি হওয়ার সুযোগ।
সম্প্রতি ‘ইনকাম ট্যাক্স ইনফরম্যান্টস রিওয়ার্ড স্কিম ২০১৮’ নামে নয়া প্রকল্প কথা ঘোষণা করেছে আয়কর দফতর। নয়া এই প্রকল্পে বলা হয়েছে, কেউ যদি ইনকাম ট্যাক্স ডিপার্টমেন্টকে নির্দিষ্ট করে দেশ এবং বিদেশে কালো টাকা বা বেআইনি সম্পত্তির সঠিক হদিশ দিতে পারেন, তবে সেই ব্যক্তিকে পুরস্কৃত করা হবে। দেশের মধ্যে এরূপ কালো টাকা বা বেনামি সম্পত্তির হদিশ দিতে পারলে মিলবে এক কোটি টাকা পর্যন্ত পুরস্কার। দেশের বাইরে কেউ বেনামে টাকা বা সম্পত্তি রাখলে, তার তথ্য দিলে মিলতে পারে পাঁচ কোটি টাকা পর্যন্ত পুরস্কার। তথ্য প্রদানকারী ব্যক্তির যাবতীয় তথ্য গোপন রাখা হবে বলে আয়কর দফতর জানিয়েছে। নির্দিষ্ট তথ্য সরবরাহ করে বিদেশিরাও এই প্রকল্পের লাভ পেতে পারেন।
কালো টাকা বাজেয়াপ্ত করতে এর আগে ৫০০ এবং হাজার টাকার নোটও বাতিল করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু তাতেও যে কাজের কাজ কিছুই হয়নি তাও পরবর্তীকালে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তথ্যে উঠে এসেছে। যা নগদ বাজারে ছিল তার প্রায় পুরোটাই জমা পড়েছিল কোষাগারে। লোকসভা ভোটের আর একবছরও বাকি নেই। তার আগে কালো টাকা উদ্ধারের নামে কেন্দ্র ফের চমকের রাজনীতি করছে বলেই এই প্রকল্পকে কটাক্ষ করছে বিরোধীরা। বিরোধীদের অভিযোগ, একের পর এক শিল্পপতি ব্যাঙ্ককে ফাঁকি দিয়ে বিদেশে পালিয়ে যাচ্ছে, আর সাধারণ মানুষকে কালো টাকা উদ্ধার করতে বলছে সরকার!