৭০ বছর ধরে পাকিস্তানে সংখ্যালঘুদের উপর চলা অত্যাচার নিয়ে চুপ কেন বিরোধীরা, নাগরিকত্ব আইন ইস্যুতে প্রশ্ন মোদীর

দেশজুড়ে চলা তীব্র প্রতিবাদ বিক্ষোভের মধ্যেও সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা সিএএ’র সমর্থনে নতুন বছরের শুরু থেকেই সুর চড়ালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বৃহস্পতিবার কর্নাটকের টুমকুরুতে এক জনসভায় মোদী নয়া আইন নিয়ে আন্দোলনরত বিরোধীদের এক হাত নেন। এবারও কংগ্রেস-সহ বিরোধীদের কোণঠাসা করতে প্রধানমন্ত্রী হাতিয়ার করেছেন পাকিস্তানকে। তিনি বলেন, কংগ্রেস এবং তার সহযোগী দলগুলি যারা বিক্ষোভ করছে তাদের পাকিস্তানকে প্রশ্ন করা উচিত, গত ৭০ বছর ধরে পাকিস্তানে হিন্দু-সহ অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের উপর যে অত্যাচার চলছে কেন?
প্রধানমন্ত্রী এদিনও বলেন, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনে প্রতিবেশী দেশগুলির যে সকল সংখ্যালঘু মানুষ ধর্মীয় অত্যাচারের শিকার, তাদের ভারতের নাগরিকত্ব দেয়ার কথা বলা হয়েছে, কিন্তু বিরোধীরা তার বিরোধিতা করছে। অথচ তারা পাকিস্তানকে প্রশ্ন করছে না। বিরোধীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর উপদেশ, আন্দোলনকারীদের পাকিস্তানকে প্রশ্ন করা উচিত গত ৭০ বছর ধরে সেখানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষদের উপর যে অত্যাচার চালানো হয়েছে তা নিয়ে। পাশাপাশি মোদী বলেন, এই ইস্যুতে এখন আন্তর্জাতিক মঞ্চে পাকিস্তানকে কোণঠাসা করার সময় এসেছে। কিন্তু বিরোধীরা সেই সুযোগ হাতছাড়া করছে। পাকিস্তানের এই কার্যকলাপের বিরুদ্ধে বিরোধীদের সোচ্চার হওয়া উচিত বলেও মনে করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, যাঁরা সিএএ’র বিরোধিতা করছেন, তাঁরা আসলে প্রতিবেশী পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তানে অত্যাচারিত ধর্মীয় সংখ্যালঘু মানুষদের এদেশে আশ্রয়দানেরই বিপক্ষে। বিরোধীদের উদ্দেশে মোদীর মন্তব্য, তাঁরা আন্দোলন করছেন করুন। কিন্তু পাকিস্তান থেকে শরণার্থী হয়ে আসা হিন্দুদের সমর্থনেও মিছিল থেকে স্লোগান দিন।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পাল্টা জবাব দিয়েছে কংগ্রেস। প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে কংগ্রেসের ট্যুইটে বলা হয়েছে, পাকিস্তান ‘৬৫ এবং ‘৭১ এর যুদ্ধে ভারতের কাছে যে যোগ্য জবাব পেয়েছে তার ক্ষত এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি। প্রধানমন্ত্রী দেশকে ভুল বোঝানো বন্ধ করুন। কংগ্রেসের দাবি, তারা সংসদের বিরোধিতা করছে না, বরং প্রধানমন্ত্রীর বিভাজন নীতির বিরোধিতা করছে। কংগ্রেস কিছুতেই দেশকে ভাগ হতে দেবে না।
উল্লেখ্য, গত ডিসেম্বর মাসে সংসদের দুই কক্ষে পাশ হয়ে গিয়েছে সংশোধিত নাগরিকত্ব বিল। রাষ্ট্রপতির সইয়ের পর তা আইনেও পরিণত হয়েছে। তবে এই আইনে যেভাবে ধর্মের ভিত্তিতে প্রতিবেশী দেশের সংখ্যালঘুদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে এবং মুসলিম সম্প্রদায়কে বাদ রাখা হয়েছে, তার বিরুদ্ধে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে তীব্র আন্দোলন। এই আইন সংবিধান বিরোধী বলে আন্দোলনে নেমেছে কংগ্রেস-সহ বিজেপি বিরোধী দলগুলি।

Comments are closed.