এবার ট্রেনের পার্সেল ডেলিভারির দায়িত্ব বেসরকারি হাতে ছাড়ল রেল, শিয়ালদহ এবং মুম্বই থেকে রাজধানীতে চালু হল নতুন ব্যবস্থা

ইতিমধ্যেই ভারতীয় রেলের বেসরকারিকরণের পথে হাঁটতে শুরু করেছে কেন্দ্র। পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে বেসরকারি সংস্থার হাতে। এবার রেলের পার্সেল সামলানোর দায়িত্বও এবার বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দিতে চলেছে কেন্দ্র।
ইতিমধ্যেই শিয়ালদহ-রাজধানী এবং মুম্বই-রাজধানী এক্সপ্রেসে পরীক্ষামূলকভাবে বেসরকারি ডেলিভারি সংস্থার হাতে ট্রেনের পার্সেলের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর। আগামী এক মাস পর এই কাজের সমীক্ষা করা হবে। সূত্রের খবর, এই পাইলট প্রজেক্টে সাফল্য এলে অন্যান্য দূরপাল্লার মেল এবং এক্সপ্রেস ট্রেনের পার্সেলের দায়িত্বভারও বহুজাতিক বেসরকারি সংস্থাকে সঁপে দেবে মোদী সরকার। যার জেরে কাজ কাজ হারানোর আশঙ্কা করছেন ট্রেনের ওয়াগনে মালপত্র তোলা-নামানোর কাজে যুক্ত থাকা কয়েক হাজার রেলকর্মী।
এলএইচবি কোচের রাজধানী এক্সপ্রেসে ২ টি পার্সেল ওয়াগন থাকে। এই ওয়াগন দুটি এক্সপ্রেসের ট্রেনের গার্ডের কামরার সঙ্গে সংযুক্ত। রেল মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, দুটো পার্সেল ওয়াগনে মোট ৪ টনের বেশি মালপত্র তোলা যায়। শিয়ালদহ-রাজধানী এবং মুম্বই-রাজধানী এক্সপ্রেসের এই পাইলট প্রজেক্টে দেড় টন মালের দায়িত্ব রেল নিজের হাতে রেখে বাকি আড়াই টনের দায়িত্ব দিচ্ছে বেসরকারি সংস্থার হাতে।
এক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠছে, ট্রেনে বেসরকারি কোনও সংস্থার হাতে পার্সেলের দায়িত্ব থাকাকালীন যদি কোনওভাবে ওয়াগন থেকে কারও কোনও মালপত্র খোয়া যায়, সেই দায়ভার কি রেল নেবে? নাকি সংশ্লিষ্ট বেসরকারি সংস্থা? তাছাড়াও, মাল ওঠানো-নামানোর সঙ্গে যুক্ত কয়েকশো হাজার কর্মী যদি কর্মচ্যুত হন, সেক্ষেত্রে তাঁদের জন্য কি কোনও বিকল্প ব্যবস্থা করে রেখেছে রেল? এই প্রশ্নও উঠছে।
বুধবারই রেল মন্ত্রক থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, কেন্দ্রের মোদী সরকারের প্রথম পাঁচ বছরে রেলে প্রায় দেড় লক্ষেরও বেশি কর্মী নিয়োগ হয়েছে। যদিও সূত্রের খবর, আগামী এক বছরের মধ্যে প্রচুর রেলকর্মী ছাঁটতে চলেছে কেন্দ্র। এই মুহূর্তে ভারতীয় রেলে কর্মীর সংখ্যা প্রায় ১৩ লক্ষ। একে ১০ লক্ষে নামানোর লক্ষ্য নিয়েছে রেল মন্ত্রক। অর্থাৎ, আগামী কয়েক মাসের মধ্যে কাজ হারাতে পারেন ভারতীয় রেলের ৩ লক্ষ অফিসার এবং কর্মচারী। এবার পার্সেল সামলানোর দায়িত্বও বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দেওয়ায় আরও বহু রেলকর্মীর কাজ হারানোর আশঙ্কা তীব্র হচ্ছে।

Comments are closed.