রাফাল বিতর্কের মাঝেই রাহুল গান্ধী দেখা করলেন হ্যালের কর্মীদের সঙ্গে

ভবিষ্যতে আমরা আপনাদের সাথে কাজ করতে চাই, জানতে চাই আপনাদের সমস্যা, অসুবিধা। হ্যাল শুধুমাত্র একটি প্রতিষ্ঠান নয়, এটি দেশের এক গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ, যা স্বাধীনতার পর আমরা তৈরি করেছিলাম। শনিবার বেঙ্গালুরুতে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা হিন্দুস্থান এরোনটিক্স লিমিটেডের (হ্যাল) দফতরে গিয়ে সংস্থার প্রায় ১০০ জন বর্তমান ও প্রাক্তন কর্মীর সাথে দেখা করে এই কথা জানালেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। সংস্থার প্রাক্তন ও বর্তমান কর্মীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে রাহুল বলেন, আপনারা দেশের জন্য যা করেছেন তার জন্য দেশবাসী আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞ। রাহুলের এই হ্যাল সফরকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কারণ, কংগ্রেস প্রথম থেকেই বলে আসছে অর্ধশতাব্দীরও বেশি পুরনো এবং যুদ্ধ বিমান নির্মাণে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন হ্যালকে বাদ দিয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকার ইচ্ছা করে সদ্য জন্ম নেওয়া অনিল আম্বানীর রিলায়েন্স ডিফেন্সকে ফ্রান্সের সাথে রাফাল যুদ্ধ বিমান চুক্তির আওতায় বরাত পাইয়ে দিয়েছে। হ্যাল দফতরে যাওয়ার পাশাপাশি রাহুল এদিন বেঙ্গালুরুতে একটি দলীয় জনসভাও করেন। সমাবেশস্থলের কাছে রাখা ছিল হ্যাল নির্মিত দেশিয় প্রযুক্তিতে তৈরি আধুনিক হাল্কা যুদ্ধ বিমান তেজসের রেপ্লিকাও।
রাহুলের এই হ্যাল সফর এমন সময় হল যখন ফ্রান্স সফরে গিয়ে রাফাল যুদ্ধ বিমানের বরাত পাওয়া নির্মাণকারী সংস্থা ড্যাসল্ট এর কর্তাদের সাথে বৈঠক করছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। প্রতিরক্ষামন্ত্রীর এই সফরকে ইতিমধ্যেই কটাক্ষ করে রাহুল জানিয়েছেন, বিতর্কের জেরে চাপে পড়ে ড্যাসল্টকে পাল্টা চাপ দিয়ে কেন্দ্রের সুরে সুরে মিলিয়ে মিথ্যা বলতে রাজি করিয়ে বিষয়টা ধামাচাপা দিতেই ফ্রান্সে গেছেন তিনি। যাতে সব পক্ষের বয়ান একই পরিকল্পনা মেনে হয়।
উল্লেখ্য, গত বুধবারই রাফাল চুক্তি নিয়ে নয়া বোমা ফাটায় ফরাসি তদন্তমূলক জার্নাল ‘মিডিয়াপার্ট’। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘এন ডি’ টিভি’র রিপোর্ট অনুযায়ী, ‘মিডিয়াপার্ট’ নামের ওই ফরাসি জার্নালটি রাফাল চুক্তি নিয়ে একটি আর্টকেল লিখেছে। সেখানে এই চুক্তির অন্যতম অংশ রাফাল প্রস্তুতকারী ফরাসি সংস্থা ড্যাসল্টের কিছু গোপন নথির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। যাতে বলা হয়েছে, ওই নথিতে নাকি স্পষ্ট বলা হয়েছে, ভারতের থেকে এই যুদ্ধ বিমানের বরাত পেতে রিলায়েন্সের সাথে চুক্তি করার শর্তটি ছিল বাধ্যতামূলক। অন্যথায় এই চুক্তি করা যেত না।
বৃহস্পতিবার এই নয়া তথ্য সামনে আসার পর, ড্যাসল্টের তরফে এক বিবৃতি প্রকাশ করে জানানো হয়েছে, তারা নিজেরা স্বাধীনভাবে তাদের বাণিজ্যিক অংশীদার হিসাবে অনিল আম্বানীর সংস্থাকে বেছে নিয়েছিল। কোনও চাপ তাদের দেওয়া হয়নি। তাদের আরও দাবি, মূল চুক্তির মাত্র দশ শতাংশ অংশের চুক্তি হয়েছে রিলায়েন্সের সাথে, বাকি ৯০ শতাংশ অংশের জন্য ১০০ টিরও বেশি সংস্থার সাথে কথা হয়েছে। তবে ‘মিডিয়াপার্ট’ এখনও দাবি করছে, তারা যা বলেছে তা যথেষ্ট প্রমাণ হাতে নিয়ে লিখেছে।

Comments are closed.