কেন্দ্র-আরবিআই দ্বন্দ্বে উর্জিত প্যাটেলের পাশে দাঁড়ালেন প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন

বর্তমানের পাশে দাঁড়ালেন পূর্বসূরি। সম্প্রতি বিভিন্ন ইস্যুতে কেন্দ্রের সঙ্গে দেশের রিজার্ভ ব্যাঙ্কের যে মতভেদের সৃষ্টি হয়েছে, তাতে উর্জিত প্যাটেলের পাশে দাঁড়ালেন প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন।
কেন্দ্র মনোনীত আরবিআই রেগুলেটার্স বোর্ড (পরামর্শদাতা) এর সঙ্গে আরবিআই কর্তাদের সাম্প্রতিক যে মতানৈক্য তৈরি হয়েছে, সেই ইস্যুতে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের বর্তমান গভর্নর উর্জিত প্যাটেলের পক্ষই নিলেন ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর। এক বিবৃতিতে রাজন জানিয়েছেন, আরবিআই-এর রেগুলেটার্স বোর্ড অপারেশনাল বোর্ড নয়। তাই রেগুলেটার্স বোর্ডের কাজ হল শুধুমাত্র পরামর্শ দেওয়া, আরবিআই-এর কাজে হস্তক্ষেপ করা বা তাদের চাপ দেওয়া নয়। তাঁর মতে, কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে ও কার্যকর করা হবে তা ঠিক করার শেষ সিদ্ধান্ত নিতে পারে শুধুমাত্র আরবিআই-এর অপারেশনাল বোর্ড, যার প্রধান আরবিআই গভর্নর।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি কানাঘুষো চলছে, আরবিআই রেগুলেটর্স বোর্ডের সঙ্গে ব্যাঙ্কের কিছু বিষয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে। রেগুলেটার্স বোর্ডের সদস্য হিসাবে কেন্দ্রীয় সরকার সম্প্রতি মনোনীত করেছে স্বদেশী ভাবধারার অর্থনীতিবিদ এস গুরুমূর্তিকে। অনেকেই মনে করছেন, গুরুমূর্তি কমিটিতে আসার পর পরামর্শ প্রদান ছেড়ে সরাসরি আরবিআই-এর কাজে নাক গলাতে চাইছে বোর্ড। আর সেখান থেকেই কেন্দ্রের সঙ্গে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মতভেদের সূত্রপাত।
রাজন কোনও রাখঢাক না করেই জানিয়েছেন, আরবিআই-এর রেগুলেটর্স বোর্ডের সদস্যরা হলেন সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্র থেকে আসা গুণী মানুষ। কিন্তু তাঁরা কেউ ব্যাঙ্কার, আর্থিক বিশেষজ্ঞ বা পেশাদার অর্থনীতিবিদ নন। তাই তাঁরা প্রয়োজনে নিজেদের পরামর্শ রেগুলেটার্স বোর্ডের মাধ্যমে আরবিআইকে দিতে পারেন, কিন্তু সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকারী আরবিআই-এর অপারেশনাল বোর্ড। যারা আরবিআই-এর কাজকর্ম সামলান। নিজের বক্তব্য জানাতে গিয়ে রাহুল দ্রাভিড়ের উদাহরণ টেনেছেন রাজন বলেছেন, পরামর্শদাতারা রাহুল দ্রাভিড়ের মতো কোচের ভূমিকা পালন করে পরামর্শ দিতে পারেন, কিন্তু সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতে পারেন না বা নভজ্যোত সিধুর মতো বিষয়টি নিয়ে চিৎকার করাও তাঁদের কাজ নয়।
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে কেন্দ্রের ৩.৬ লক্ষ কোটি সাহায্যের যে প্রস্তাব আরবিআই নাকচ করেছে, সেই ইস্যুতেও উর্জিত প্যাটেলের পক্ষেই মুখ খুলেছেন রাজন। তাঁর মতে, প্রয়োজনের অতিরিক্ত এই বিপুল অর্থ যদি আরবিআই কেন্দ্রকে দেয়, তবে এই টাকা বাজারে চলে যাবে। ফলে ফিসকাল ডেফিসিট আয়ত্বের বাইরে চলে যেতে পারে, দেখা দিতে পারে মুদ্রাস্ফীতি। আরবিআই রেগুলেটার্স বোর্ডের বর্তমান কাজকর্ম নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে রাজন বলেন, দু’পক্ষেরই সম্মানের সঙ্গে পরস্পরের সঙ্গে আলোচনা করে কাজ করা উচিত।

Comments are closed.