রামদেবের করোনিলকে ছাড় দিল কেন্দ্র, তবে করোনা নিরাময়ের কথা প্রচার করা যাবে না, বলতে হবে ইমিউনিটি বুস্টার!

করোনাভাইরাসের ওষুধ হিসেবে নয়, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিকারী বা ইমিউনিটি বুস্টার হিসেবে পতঞ্জলির তৈরি কোরোনিল বিক্রি করা যাবে বলে জানাল কেন্দ্রীয় সরকারের আয়ুষ মন্ত্রক।
এছাড়া তিনটি ওষুধ বানানোর জন্যও রামদেবের কোম্পানি পতঞ্জলিকে লাইসেন্স দিল তারা। সব নিয়ম-নীতি মেনে পতঞ্জলি এই তিনটি ওষুধের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু করতে পারে বলে জানানো হয়েছে। কিন্তু করোনাভাইরাস নিরাময় হয়, এই দাবি করে কোরোনিল বিক্রি করা যাবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে আয়ুষ মন্ত্রক। কোরোনিলের প্যাকেটে কোভিড-১৯ এর উল্লেখ করা যাবে না বলেও জানানো হয়েছে।
উত্তরাখণ্ড সরকারের দেওয়া একটি নোটিসের জবাবে পতঞ্জলি দাবি করেছে, করোনাভাইরাস নিরাময় হয় এই কথা বলে কোনও দ্রব্যের প্রোমোশন তারা করেনি। শুধুমাত্র করোনার চিকিৎসায় কোরোনিলের সফল ট্রায়ালের কথা সংবাদমাধ্যমের কাছে জানানো হয়েছিল। তার থেকেই বিতর্কের সূত্রপাত বলে অভিযোগ পতঞ্জলির।
বুধবার সাংবাদিক বৈঠক করে রামদেব দাবি করেন, আয়ুষ মন্ত্রকের সঙ্গে আমাদের কোনও মতভেদ নেই। করোনিল, স্বসারি, গিলোই, তুলসি, অশ্বগন্ধার উপর নিষেধাজ্ঞা নেই। বুধবার থেকেই ‘করোনিল স্বসারি কিট’ নিষেধাজ্ঞা ছাড়া বাজারে পাওয়া যাবে। সাংবাদিক বৈঠক থেকে আয়ুষ মন্ত্রক ও মোদী সরকারকে ধন্যবাদ জানান রামদেব।
প্রসঙ্গত, গত ২৩ জুন রামদেবের সংস্থা দাবি করে, করোনার ওষুধ তৈরি করে ফেলেছে তারা। রামদেব নিজে দাবি করেছিলেন, ইমিউনিটি বুস্টার নয়, করোনিল হল করোনার ওষুধ। কিন্তু এক সপ্তাহ যেতে না যেতেই নিজেদের অবস্থান থেকে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে মঙ্গলবার পতঞ্জলির সিইও আচার্য বালাকৃষ্ণ জানান, তাঁরা একবারও করোনার ওষুধ তৈরির কথা বলেননি৷ উত্তরাখণ্ড ড্রাগ ডিপার্টমেন্টের নোটিসের জবাবে এভাবেই ডিগবাজি খায় পতঞ্জলি।
করোনিলের বিজ্ঞাপন প্রচার বন্ধ করে গত সপ্তাহে আয়ুষ মন্ত্রক জানিয়েছিল কেবল ইমিউনিটি বুস্টার তৈরির লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল পতঞ্জলিকে। এরপর, দেশের মানুষকে করোনা পরিস্থিতিতে বিভ্রান্ত করার অভিযোগে বিহার, জয়পুরে পতঞ্জলির বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে। জয়পুরের এফআইআরে রামদেব, আচার্য বালাকৃষ্ণ সহ সংস্থার সঙ্গে জড়িত অন্যান্যদের নাম রয়েছে। এদিন এই প্রসঙ্গে রামদেব বলেন, মনে হচ্ছে, যোগ ও আয়ুর্বেদ শাস্ত্রের চর্চা ভারতে অপরাধ। এভাবে দেশের একশো জায়গায় দেশদ্রোহী ও সন্ত্রাসবাদীর বিরুদ্ধে এফআইআই দায়ের হয়, মন্তব্য রামদেবের। এখানেই শেষ নয়, রামদেব বলেন, তাঁদের ৫০০ জন বিজ্ঞানী দিনরাত এক করে কাজ করেন। করোনার ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের তথ্যও দেওয়া হয়। এটাই নাকি ড্রাগ মাফিয়া, বহুজাতিক সংস্থা যারা স্বদেশি জিনিসের বিরোধী তাদের চটিয়ে দিয়েছে, দাবি রামদেবের।

Comments are closed.