কামারহাটিতে ‘মিত্র-যুদ্ধে’ বামেদের বাজি তরুণ তুর্কি সায়নদীপের গলায় দিন বদলের গান

সায়নদীপ হেসে বললেন, জানেন আমি ছাত্র নেতাদের মধ্যে একমাত্র যে একই সঙ্গে SFI এবং DYFI-এর স্টেট প্রেসিডেন্ট হয়েছিলাম

১৯৫২, ১৯৫৭ জ্যোতি বসু ভোটে লড়েছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার কামারহাটি কেন্দ্র থেকে। মাঝে ১৯৭২ এবং ২০১১ বাদ দিলে ১৯৬৭ থেকে ২০১৬, টানা সিপিএম জিতে এসেছে কামারহাটি থেকে। এবারে সেই কামারহাটি কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী তিনি। দাদু, ঠাকুমা দেশ স্বাধীন হওয়ার আগে থেকে কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য। ১৭ এপ্রিল কামারহাটিতে ভোট। ব্যস্ততা তুঙ্গে। তারই মাঝে The Bengal Story-এর সঙ্গে কথা বললেন কামারহাটির সিপিএম প্রার্থী সায়নদীপ মিত্র।

আপনার বিরুদ্ধে তৃণমূলের হেভিওয়েট আরও একজন ‘মিত্র’, রাজ্য রাজনীতিতে কামারহাটি মদন মিত্রের গড় হিসেবে পরিচিত, কী বলবেন? দেখুন কামারহাটির মানুষ আগে জানতেন না উনি মানুষটা কেমন। কিন্তু এই দশ বছরে এখানকার মানুষের কাছে ওঁর মুখোশ খুলে গিয়েছে। প্রাক্তন মন্ত্রী তথা তৃণমূল প্রার্থী মদন মিত্রকে তীব্র আক্রমণ শানালেন আলিমুদ্দিনের অন্যতম তরুণ সৈনিক। জয়ের বিষয়ে আশাবাদী সায়নদীপের মন্তব্য, একুশে ২০১৬ এর থেকেও বেশি ভোটে জিতছি।

ক্লাস সেভেন থেকে পাড়ায় SFI করেছেন। বললেন, তখন তো বুঝতাম না, তবে ওই লাল ঝান্ডাটা ছোট থেকেই টানতো। ভৈরব গাঙ্গুলি কলেজ থেকে গ্র্যাজুয়েশন। ওই কলেজেই তাঁর মা ছিলেন অধ্যাপক। কলেজ থেকেই বাম ছাত্র রাজনীতিতে হাতে খড়ি। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতা নিয়ে স্নাতকোত্তর পড়াশোনা।

২০০৪ সালে জেলা SFI এর সেক্রেটারি। ২০০৮ সালে SFI রাজ্য সভাপতি। ২০১২ সালে DYFI-এর রাজ্য সভাপতি।পার্টির সর্বক্ষণের কর্মী সায়নদীপ হেসে বললেন, জানেন আমি ছাত্র নেতাদের মধ্যে একমাত্র যে একই সঙ্গে SFI এবং DYFI-এর স্টেট প্রেসিডেন্ট হয়েছিলাম।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়লেও কলেজের থেকে বেশি জেলায় রাজনীতি করতেন। ২০১১ সালে রাজ্যে বামেদের ভরাডুবির পর, সংগঠনের শক্তি বাড়াতে জেলার মাটি কামড়ে পড়েছিলেন।

[আরও পড়ুন- তৃণমূল-পিকে বিচ্ছেদ নিয়ে ভুয়ো খবর, আবার বিজেপিকে কটাক্ষ আইপ্যাকের]

সাংবাদিকতা নিয়ে মাস্টার্স করেছেন, পার্টির কাজের পাশাপাশি কখনও মনে হয়নি সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত হই? তরুণতুর্কি বাম নেতার উত্তর, দেখুন আমার ব্যক্তিগত জীবনে চাহিদা কম, পার্টির তরফে থেকে যেটুকু সাম্মানিক পাই তাতেই চলে যায়। বলেন, চাকরি করলে পার্টির কাজ কখন করব?

কোনও বড় নাম নয়। রাজনীতিতে আসার নেপথ্যে পরিবারের পাশাপাশি সায়নদীপকে প্রভাবিত করেছেন স্থানীয় নেতৃত্ব। কথায় কথায় বললেন, কমিউনিস্ট পার্টিতে এরকম অনেক নেতৃত্ব আছেন যাঁরা প্রচারের আলোয় আসতে চান না। কিছুটা নস্টালজিক হয়ে প্রার্থী জানালেন, দেখুন আপনারা চিনবেন না, আমরা পাড়ায় দলের কর্মী সমীরণ ব্যানার্জি, বিশু দাসদের মত মানুষদের দেখে বড় হয়েছি। বামপন্থী ছাড়া অন্য কোনও রাজনীতির কথা ভাবতেই পারি না।

সায়নদীপ স্বপ্ন দেখেন রাষ্ট্র কাঠামো বদলাবে, সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হবে। আজীবন লালঝাণ্ডা নিয়ে বাঁচার ইচ্ছে সিপিএমের তরুণ প্রার্থী নিশ্চিত, সরকার তৈরি করতে যত আসন দরকার তা সংযুক্ত মোর্চা পাচ্ছে।

Comments are closed.