এবার ICC তে সৌরভ? দাদাকে কেন্দ্র করে কি ভারত-পাক লড়াই, কোন দিকে ক্রিকেট দুনিয়া?

মহানাটকীয় পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে সৌরভ গাঙ্গুলির বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট হওয়ার দিন এই সম্ভাবনা উঁকি দিয়েছিল। এবার কি সেই সম্ভাবনারই ডানা মেলে আকাশে ওড়ার অপেক্ষা? সৌরভ গাঙ্গুলির দাদাগিরি কি এবার আইসিসিতে?
ক’দিন আগেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল বিজ্ঞাপন দিয়ে জানিয়েছে, আইসিসি চেয়ারম্যান পদের জন্য আগ্রহী প্রার্থীরা আবেদন করতে পারেন। একদা বিসিসিআই কর্তা শশাঙ্ক মনোহরের পদত্যাগের পর থেকেই আইসিসি চেয়ারম্যান পদ খালি। একাধিক প্রার্থী থাকলে কি ভোট হবে, আইসিসির বিবৃতিতে তা স্পষ্ট নয়।

এদিকে আরব সাগরের পাড়ে বিসিসিআই সদর দফতর ক্রিকেট সেন্টারে দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়ে গিয়েছে। আইসিসির দেওয়া শর্ত অনুযায়ী বিসিসিআইয়ের বর্তমান প্রেসিডেন্ট সৌরভ গাঙ্গুলিই সঠিক লোক, এমনটাই মনে করছে মুম্বইয়ের ক্রিকেট সেন্টার।

আর এই খবর পাওয়ার পরই এক নতুন জল্পনা দানা বেঁধেছে ক্রিকেট বিশ্বে। তা হল, আইসিসি চেয়ারম্যান নির্বাচন নিয়ে কি ফের একবার ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্ব মাথাচাড়া দেবে?

 

জল্পনার কারণ 

সৌরভ গাঙ্গুলি নিজে দীর্ঘদিন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ভারতীয় দলের অধিনায়কত্ব করেছেন। খেলা ছাড়ার পর প্রত্যক্ষভাবে বাংলার ক্রিকেটের সঙ্গে যুক্ত। সিএবি প্রেসি়ডেন্ট পদে থাকতে থাকতেই সবাইকে টপকে বিসিসিআই সভাপতি। একজন সর্বোচ্চ পর্যায়ের ক্রিকেট প্রশাসক হতে গেলে যা যা থাকা দরকার, তার টেক্সট বইয়ের নাম সৌরভ গাঙ্গুলি। তাই ক্রিকেট বিশ্বের আমেরিকা বলে পরিচিত ভারতের প্রার্থীকে সমর্থন না দিয়ে থাকতে পারবে না বিভিন্ন সদস্য দেশ। তাই স্রেফ নামের ভারেই সৌরভের জয় নিশ্চিত বলে মনে করছে বিসিসিআই। কিন্তু এখানেই রয়েছে বড়ো খটকা। সেই খটকার নাম পাকিস্তান।

মনোহরের ইস্তফার পরই পাকিস্তান ক্রিকেট প্রশাসনের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে যুক্ত এহসান মানি নিজেকে ওই পদের জন্য তুলে ধরছিলেন। এবার রাতারাতি সৌরভ ঢুকে পড়ায় তাঁর দৌড় কঠিন হয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে সাম্প্রতিক ইন্টারভিউয়ে মানি এক নতুন দাবি করেছেন। এহসান মানির মতে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলকে এবার বিগ থ্রির (ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড) পকেট থেকে বের করে আনতে হবে। আর এটা শুরু হবে আইসিসি চেয়ারম্যানশিপ দিয়ে। তাই এবার অন্য দেশ থেকে চেয়ারম্যান আসুক। ক্রিকেট বিশ্ব মানেই যে ওই তিন দেশ, এমন তো নয়। তাই সবাই ঘুরেফিরে সুযোগ পাক।

আইসিসি গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, ১৭ টি সদস্য দেশের দুই তৃতীয়াংশের সমর্থন জোগাড় করতে পারলে জয় হবে। আবার সরাসরি ৯ সদস্য দেশ সঙ্গে থাকলেও বাজিমাত। এখন প্রশ্ন হল, এই সমীকরণে জল ঢালার যে কাজ শুরু করেছে পাক ক্রিকেট বোর্ড, তা কতটা সাফল্য পাবে।

আইসিসি সম্বন্ধে ওয়াকিবহালরা মনে করছেন, বিভিন্ন সদস্য দেশের মধ্যে এই তিন দেশের দাদাগিরি নিয়ে চাপা ক্ষোভ আছে। পাকিস্তানের এহসান মানি চেয়ারম্যানশিপের দৌড়ে সেই কার্ড খেলে সমর্থন আদায়ের খেলায় নেমেছেন। যা সৌরভের আইসিসি চেয়ারম্যান হওয়ার দৌড়কে কঠিন করে তুললো বলেই মনে করছেন ক্রিকেট প্রশাসনের সঙ্গে যুক্তরা।

Comments are closed.