১৯৮৪-র শিখ দাঙ্গায় বেকসুর খালাস ৭, দাঙ্গাস্থলে হাজির হওয়া মানেই দোষী নয়, মন্তব্য সুপ্রিম কোর্টের

১৯৮৪ সালের শিখ দাঙ্গায় অভিযুক্ত ৭ জনকে বেকসুর খালাস করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। গত বছরের নভেম্বর মাসে দিল্লি হাইকোর্ট দাঙ্গায় অভিযুক্ত ৮৮ জনের ৫ বছরের কারাদণ্ড বহাল রাখে। হাইকোর্টের সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যান অভিযুক্ত ৮৮ জনের মধ্যে গনেশণ সহ আরও ৬ ব্যক্তি। এই ৭ অভিযুক্তকে পাঁচবছরের কারাদণ্ডের সাজা শুনিয়েছিল দিল্লি হাইকোর্ট।

মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ, বিচারপতি দীপক গুপ্তা ও বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, সাক্ষীদের বয়ানের ভিত্তিতে প্রমাণ হচ্ছে না, যে ওই ৭ ব্যক্তি কোনওভাবে দাঙ্গায় জড়িত ছিলেন বা দাঙ্গায় মদত দিয়েছিলেন। সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, দাঙ্গাস্থলে কৌতূহলবশত কেউ হাজির হলে তিনিও দোষী হবেন, এমনটা নয়। ওই সাত অভিযুক্তের বিরুদ্ধে দাঙ্গা বাধানো, অগ্নি সংযোগ বা লুঠের কোনও সাক্ষ্যপ্রমাণ না থাকায় তাঁদের বেকসুর খালাসের নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
১৯৮৪ সালে ৩১শে অক্টোবর শিখ নিরাপত্তারক্ষীর গুলিতে নিহত হন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। তাঁর মৃত্যুর পর ভারতের নানা প্রান্তে শুরু হয় হিংসা। সরকারি হিসেবে, দেশজুড়ে প্রায় ৩ হাজার শিখ ধর্মাবলম্বীকে হত্যা করা হয়। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা হয়েছিল রাজধানী দিল্লির ত্রিলোকপুরীতে, যেখানে বহু শিখ ধর্মাবলম্বীরা মানুষ বসবাস করতেন। প্রথম এফআইআর অনুযায়ী, দাঙ্গায় ত্রিলোকপুরীতে কমপক্ষে ৯৫ জন মানুষের মৃত্যু হয়। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় তাঁদের ঘর-বাড়ি। জারি হয় কার্ফু। কিন্তু তারপরেও অশান্তি রোখা যায়নি। দাঙ্গা বাধানো ও কার্ফু অমান্য করার অভিযোগে ১০০ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এর মধ্যে ৮৮ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। এই অভিযুক্তদের মধ্যে অনেকেরই মৃত্যু হয়েছে। গত নভেম্বরে দিল্লির আদালত যশপাল সিংহ ও নরেশ শেরাওয়াত নামে দুই অভিযুক্তকে ফাঁসির সাজা দেয়। এছাড়াও, এক শিখ পরিবারের ৫ জনের হত্যার ঘটনায় মদত দেওয়ার অভিযোগে কংগ্রেসের প্রাক্তন সাংসদ সজ্জন কুমারকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয় দিল্লি হাইকোর্ট।

Comments are closed.