জেলা সভাপতির পদ থেকে অপসারণের পর আর কতদিন তৃণমূলে শিশির? বিধানসভার আগেই কি বিজেপিতে, জল্পনা

শিশির অধিকারী জানান দলের সঙ্গে মূল যোগসূত্রটা ছিঁড়ে গেল এখন কেবল নামেই দলে

জেলা সভাপতির পদ থেকে অপসারিত বর্ষীয়ান শিশির অধিকারী। নাকের বদলে নরুনের মত কাঁথির সাংসদকে দেওয়া হয়েছে চেয়ারম্যান পদ। কিন্তু ডানা ছাঁটার প্রক্রিয়া যে শুরু হয়ে গিয়েছে তা বুঝতে অসুবিধা হয়নি কাঁথির শান্তিকুঞ্জের প্রবীনতম বাসিন্দা। অতঃপর কী করবেন শুভেন্দুর বাবা শিশির অধিকারী? তৃণমূলে আর কতদিন? 

সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার খবর পেয়েছেন অপারেশন থিয়েটার থেকে বেরিয়ে। সদ্য ছানি অপারেশন হয়েছে তাঁর। চোখে কালো চশমা নিয়ে শিশির কেবল জানিয়েছেন এই বিষয়ে তাঁর কিছুই বলার নেই। কিন্তু সত্যিই কি কিছু বলার নেই সদ্য প্রাক্তন সভাপতির? 

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, শুভেন্দু বিজেপিতে যাওয়ার পর অধিকারী বাড়ির বাকি সদস্যদের তৃণমূলের হয়ে প্রকাশ্য কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া কার্যত অসম্ভব। সেক্ষেত্রে প্রবীণ রাজনীতিবিদের বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নের মুখে পড়তে পারে। তাই আগ বাড়িয়ে মন্তব্যের পথে যাননি শিশির। আবার তৃণমূলে সক্রিয়ও হননি। জল্পনা তৈরি হয়েছিল আর কতদিন জল মাপবেন শিশির-দিব্যেন্দু? 

ক’দিন আগেই প্রশাসক পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় শিশিরবাবুর ছোট ছেলে সৌমেন্দুকে। তৃণমূলের এই সিদ্ধান্তের পর বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। শিশির অধিকারীর অপসারণের পর তিনি কি ছোট ছেলের পথেই হাঁটবেন? নাকি মেজ ছেলে শুভেন্দু যেমন বিধায়কপদ ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন, বাবাও তেমনই ভাবছেন? আদৌ বিজেপিতে যাবেন কী শিশির অধিকারী? 

অপসারণের পর শিশির অধিকারী জানিয়েছেন দলের সঙ্গে মূল যোগসূত্রটা ছিঁড়ে গেল। এখন তিনি কেবল নামেই দলে আছেন। কিন্তু তাঁর নিষ্ক্রিয়তার জেরে যদি তৃণমূল তাঁর জেলা চেয়ারম্যান পদও কেড়ে নেয়, কী করবেন? শিশির অধিকারীর উত্তর তাহলে সন্ন্যাস নেওয়া ছাড়া উপায় কী? যা অপমানিত হলাম তারপর আর ফিরে যাওয়ার ইচ্ছে নেই। তাহলে কোন পথ খোলা আছে শিশিরের সামনে? 

রাজনৈতিক মহল বলছে, শিশিরবাবু এখন যেমন নিষ্ক্রিয় আছেন বিধানসভা ভোট পর্যন্ত তেমনই থাকবেন। তারপর ফল বুঝে পরবর্তী সিদ্ধান্ত। আবার একটি অংশের ধারণা তিনি বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন। তবে সেক্ষেত্রে তাঁকে সাংসদ পদ ছাড়তে হবে। সেটা করবেন কি শিশির অধিকারী? একটা বিষয় পরিষ্কার, তৃণমূল নিজে থেকে অধিকারীদের বহিষ্কার করবে না। সেক্ষেত্রে সাংসদ হিসেবেই তিনি পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়ার জায়গায় চলে যাবেন। সাংসদ পদের মেয়াদ এখনও বাকি ৩ বছরেরও বেশি সময়। তাই শিশির অধিকারী কী করবেন তা নিয়ে জল্পনা মাত্রা ছাড়াচ্ছে। 

বাবার অপসারণ নিয়ে সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া শুভেন্দু অধিকারী বলেন, এটা অন্য দলের বিষয়। আমার বলার কিছু নেই। তাঁর সংযোজন, তৃণমূল একটি প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে। সেখানে একজন বাদে সবাই কর্মচারী। আত্মসম্মান আছে এমন লোক ওই দলে থাকতে পারবেন না। 

আর অভিমানী শিশির অধিকারী বারবার বলছেন, কেন দলনেত্রী তাঁর সঙ্গে একবার কথা বললেন না? এই পরিস্থিতিতে কালীঘাট থেকে শান্তিকুঞ্জে একটা ফোনকল কি পুরো আবহ বদলে দিতে পারে? জানা নেই কারও। কথায় বলে রাজনীতি মহান সম্ভাবনার শিল্প! 

Comments are closed.