বিজেপিতে যোগ না দেওয়া বা প্রচার না করার জন্যই কি ধোনি বাদ বিসিসিআইয়ের তালিকা থেকে! জল্পনা দেশজুড়ে

সদ্য প্রকাশিত বিসিসিআইয়ের বার্ষিক চুক্তিতে নাম নেই মহেন্দ্র সিংহ ধোনির। তাহলে কি ঘুরিয়ে ক্যাপ্টেন কুলকে গুড বাই বলে দিল ভারতীয় ক্রিকেট? এই ইস্যুতে যখন জল্পনা চরমে, ঠিক তখনই একটি ট্যুইট ক্রিকেট জগতের উত্তাপ বাড়িয়ে দিল বহুগুণ।
বিজেপিতে যোগ দেওয়া কিংবা ঝাড়খন্ড বিধানসভা নির্বাচনে তাদের হয়ে প্রচার করতে রাজি না হওয়াতেই কি ক্রিকেট ইতিহাসের সর্বকালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ অধিনায়কের ক্রিকেট কেরিয়ারে দাড়ি পড়ার উপক্রম? এই অভিযোগে এখন তোলপাড় সোশ্যাল মিডিয়া।
বিতর্কের সূত্রপাত শুক্রবার ভারতীয় সময় সকাল ৯ টা নাগাদ সুইডেনের উপস্সালা ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক অশোক সাওইনের একটি ট্যুইটকে কেন্দ্র করে। বরাবর মোদী সরকারের কড়া সমালোচক বিশ্ববন্দিত বিশ্ববিদ্যালয়ের পিস অ্যান্ড কনফ্লিক্ট রিসার্চের সিনিয়র অধ্যাপক অশোক সাওইন ট্যুইটে যা লেখেন তার নির্যাস হল, কিপিং গ্লাভসে বলিদান চিহ্ন দেওয়া থেকে শুরু করে বালাকোটের ঘটনার পর ভারতীয় দলকে সামরিক টুপি পরিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের মঞ্চে নামানো কিংবা নিজে সেনাবাহিনীর ট্রেনিংয়ে যোগ দেওয়া, সমস্ত ধরনের দেশপ্রেমিক সুলভ আচরণই ধোনির মধ্যে বারবার ফুটে উঠেছে। কিন্তু এবার সেই ক্রিকেটার এবং অধিনায়ক ধোনিকে ভুলে যাওয়ার সময়ে এসেছে। এরপরই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করেন অশোক সাওইন। লেখেন, কিন্তু ঝাড়খন্ডে বিজেপিতে যোগ দেওয়া ও বিজেপির হয়ে প্রচারে অংশ নিতে ধোনি যেই অস্বীকার করলেন, বোর্ডের চুক্তি থেকে বাদ পড়ে গেলেন। একেবারে শেষে তাঁর সংযোজন, বিজেপিতে যোগ দিলেই একমাত্র ভারতীয় হওয়ার ছাড়পত্র মিলবে।

অধ্যাপক অশোক সাওইনের এই অভিযোগে নয়া মাত্রা পেয়েছে মাহি দ্বন্দ্ব। বিশ্বকাপের পর থেকে আর নীল জার্সিতে মাঠে নামতে দেখা যায়নি ধোনিকে। কিন্তু তিনি ক্রিকেটকে গুড বাইও জানাননি। ইদানীং রাঁচিতে ফের ক্রিকেট ব্যাট হাতে অনুশীলনেও দেখা যাচ্ছে বিশ্বের সর্বোত্তম ফিনিশারকে। সামনেই আইপিএল। সেখানে এবারও সিএসকের নেতৃত্ব দেবেন মাহি। যখন আইপিএলকে পাখির চোখ করে এগোচ্ছেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি, ঠিক তখনই বিসিসিআইয়ের চুক্তির আওতা থেকে রাতারাতি বাদ পড়ার পিছনে রাজনীতির খেলা আছে কিনা তা নিয়ে গুঞ্জন চলছিলই। শুক্রবার অধ্যাপক অশোক সাওইনের বিস্ফোরক ট্যুইট সেই গুঞ্জনকেই অন্য মাত্রা দিল।
যে মহানাটকীয় পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে সৌরভ গাঙ্গুলি বোর্ড সভাপতির চেয়ারে আসিন হয়েছেন, তাতেও অনেকেই রাজনীতির গন্ধ পেয়েছিলেন। কিন্তু সৌরভ কিংবা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, দুজনেই স্পষ্ট করে এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। বিতর্ক হয়েছিল অমিত শাহের পুত্রের বোর্ডের নম্বর টু হওয়া নিয়েও। বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, বিশ্বের ধনীতম ক্রিকেট বোর্ডকে বিজেপির করতলে আনতেই অমিত পুত্র জয় শাহকে আনা হয়েছে। যদিও এই অভিযোগের স্বপক্ষে কোনও তথ্য প্রমাণ দেখাতে পারেননি অভিযোগকারীরা। কিন্তু গুঞ্জন থামেনি। এবার কার্যত একই রাজনীতির সূত্র ধরে ধোনির সঙ্গে বোর্ডের আর্থিক চুক্তির পুনর্নবীকরণ না হওয়া, সেই বিতর্ককেও তাজা করে তুলেছে।
সত্যিই কি বিজেপিতে যোগ দেওয়া কিংবা বিজেপির হয়ে প্রচারে নারাজ হওয়াতেই কোপ পড়ল ধোনির উপর? ধোনি এনিয়ে কিছু বলেননি। উত্তর দেয়নি বিসিসিআইও। বরবরের মতো এবারও পারফর্মেন্সই জাতীয় দলে ফেরার একমাত্র চাবিকাঠি, তা ধোনির চেয়ে ভালো আর কেই বা জানেন?

Comments are closed.