অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ ভোডাফোনের, কেন্দ্রের কাছে অর্থ মকুবের আর্জি জানাচ্ছে টেলিকম সংস্থা

সুপ্রিম কোর্টের রায়ের প্রেক্ষিতে ভোডাফোনের ভবিষ্যতে অনিশ্চয়তার কালোমেঘ। অর্থ মুকুবের আর্জি জানিয়ে এবার কেন্দ্রের দ্বারস্থ হচ্ছে ভোডাফোন।
বৃহস্পতিবার ভোডাফোন আইডিয়া, ভারতী এয়ারটেল সহ একাধিক বেসরকারি টেলিকম সংস্থাকে লাইসেন্স ফি এবং স্পেক্ট্রাম ফি বাবদ কেন্দ্রকে ৯২ হাজার কোটি টাকা অ্যাডজাস্টেড গ্রস রেভিনিউ বা এজিআর দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এই প্রেক্ষিতে সরকারের কাছে ঋণ মুকুবের আর্জি জানাচ্ছে ভোডাফোন। ‘দ্য ইকোনমিক টাইমস’ এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, শীর্ষ আদালতের রায় মেনে সরকারকে লাইসেন্স ফি ও স্পেক্টাম ফি বাবদ প্রায় ২৮ হাজার ৩০০ কোটি টাকা মেটাতে গেলে দেউলিয়া হয়ে যাবে ভোডাফোন। ফলত, এ দেশে ভোডাফোনের ব্যবসা নিয়েই প্রশ্নচিহ্ন উঠেছে। এই প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার পাশাপাশি, কেন্দ্রের টেলিকমিউনিকেশনস দফতরে সুদ ও অর্থদণ্ড মুকুকের আর্জি জানাচ্ছে ভোডাফোন।
শুক্রবার পর্যন্ত বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের শেয়ারে নজর দিলে দেখা যাচ্ছে, গত ৫২ সপ্তাহের মধ্যে ভোডাফোনের শেয়ার বাজারে কার্যত ধস নেমেছে। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের রায়ের প্রেক্ষিতে ভোডাফোনের শেয়ার ২৩ শতাংশ পড়ে গিয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, আর্থিক সংকটে চলতে থাকা ভোডাফোনের পক্ষে এই বিপুল ফি দেওয়া কার্যত অসম্ভব। ভোডাফোনের বর্তমান বাজারে মূলধন রয়েছে মেরেকেটে ১১ হাজার ৮১০ কোটি টাকার। অন্যদিকে, শীর্ষ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, ভোডাফোনকে লাইসেন্স ও স্পেক্ট্রাম ফি বাবদ তার চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ বেশি অর্থ দিতে হবে কেন্দ্রকে।
সরকারের তরফে ভোডাফোনের আবেদন খারিজ করে দেওয়া হলে ব্যবসার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। ভোডাফোনের বিনিয়োগ, প্রোমোটার এবং গ্রাহকদের উপরও এর নিশ্চিত প্রভাব পড়বে। দ্য ইকনমিক টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কেন্দ্র ভোডাফোনের আবেদন অগ্রাহ্য করলে, সেক্ষেত্রে ন্যাশনাল কম্পানি ল ট্রাইব্যুনালের (এনসিএসটি) দ্বারস্থ হতে পারে ভোডাফোন। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভোডাফোনের বাৎসরিক ১২ হাজার কোটি টাকা স্পেক্ট্রাম ফিজ পাওনাও কেন্দ্র মুকুব না করলে, সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট টেলিকম সংস্থাকে এনসিএলটি-র রাস্তা নিতে হবে। অন্যদিকে, ভোডাফোনের ভবিষ্যৎ যে অনিশ্চয়তার দিকে এগোচ্ছে, তাতে এর ৩২ কোটি গ্রাহকের পরিষেবাতেও বিঘ্ন প্রায় অবশ্যম্ভাবী।

Comments are closed.