কে এই গিরিশচন্দ্র মুর্মু, যিনি জম্মু-কাশ্মীরের প্রথম উপ রাজ্যপাল হতে চলেছেন?

আগামী ৩১ শে অক্টোবর দুটি আলাদা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসাবে আত্মপ্রকাশ করছে জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ। তার সপ্তাহ খানেক আগেই জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্যপাল সত্যপাল মালিককে গোয়ার রাজ্যপালের দায়িত্বে সরিয়ে কেন্দ্রশাসিত জম্মু-কাশ্মীরের প্রথম উপ রাজ্যপাল বা লেফটেন্যান্ট গভর্নর হচ্ছেন নরেন্দ্র মোদী ঘনিষ্ঠ তথা কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের ব্যয় সচিব গিরিশচন্দ্র মুর্মু।
কিন্তু কে এই গিরিশচন্দ্র মুর্মু যাঁকে শুক্রবার কেন্দ্রশাসিত জম্মু-কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গভর্নরের দায়িত্ব দেওয়া হল?
নরেন্দ্র মোদী গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন ১৯৮৫ সালের ওড়িশা ব্যাচের আইএএস অফিসার গিরিশচন্দ্র মুর্মু ছিলেন তাঁর প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি।
আদতে ওড়িশার ময়ূরগঞ্জ জেলার বাসিন্দা গিরিশচন্দ্র মুর্মু ভুবনেশ্বরের উৎকল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্র বিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর করে বীরবিঙ্ঘম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ করেন।
২০০২ সালে গুজরাত দাঙ্গা ও ইশরত জাহান ভুয়ো এনকাউন্টার মামলায় তখন উত্তপ্ত মোদী- রাজ্য। গুজরাতের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের রাজনৈতিক কেরিয়ারে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সময়ে এই ওড়িয়া আইএএস অফিসার বিশেষ ভূমিকা নিয়েছিলেন, বলে শোনা যায়। ইশরত জাহান ভুয়ো এনকাউন্টার মামলায় গিরিশচন্দ্র মুর্মুকেও জেরা করেছিল সিবিআই। সেইসময় সংবাদমাধ্যমে একটি অডিও রেকর্ড ফাঁস হয়ে যায়। অভিযোগ ওঠে, মোদীর প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি মুর্মু, তৎকালীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রফুল্ল প্যাটেল সহ একাধিক মন্ত্রী ও আমলা এক বৈঠকে আলোচনা করছিলেন কীভাবে এই এনকাউন্টারের ঘটনা ধামাচাপা দেওয়া যায়। ইশরত জাহান ভুয়ো এনকাউন্টার মামলায় সিবিআইয়ের চার্জশিটেও এই অডিও ক্লিপ রয়েছে। অন্যদিকে, গুজরাত দাঙ্গার তদন্তে তৈরি হওয়া নানাবতী কমিশনের সামনে সরকারি সাক্ষীদের প্রভাবিত করার অভিযোগ উঠেছিল গিরিশচন্দ্র মুর্মুর বিরুদ্ধে।
কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের ব্যয় সচিব পদে থাকা ৫৯ বছর বয়সী মুর্মুর কার্যকালের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ৩০ শে নভেম্বর। তার আগেই তাঁকে কেন্দ্রশাসিত জম্মু-কাশ্মীরের প্রথম উপ রাজ্যপাল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। আগামী ৩১ শে অক্টোবর শ্রীনগরে শপথ গ্রহণের পর কেন্দ্রশাসিত জম্মু-কাশ্মীরের প্রশাসনিক প্রধানের ভূমিকায় দেখা যাবে গিরিশচন্দ্র মুর্মুকে।
অন্যদিকে, কেন্দ্রশাসিত লাদাখের প্রথম উপ রাজ্যপাল হচ্ছেন প্রাক্তন প্রতিরক্ষা সচিব আর কে মাথুর। ১৯৭৭ ব্যাচের এই আইএএস অফিসারও মোদী সরকারের বিশেষ আস্থাভাজন বলে সূত্রের খবর। গত বছর চিফ ইনফর্মেশন অফিসার হিসাবে চাকরি জীবন শেষ করেছেন তিনি।

Comments are closed.