Yes Bank: ব্যাঙ্ক ডোবার ৪৮ ঘন্টা আগে ২৬৫ কোটি টাকা তুলেছে গুজরাতের সংস্থা! আগেই কি রটে গিয়েছিল খবর, প্রশ্ন

ইয়েস ব্যাঙ্কের গ্রাহকদের জন্য আরবিআই-এর জারি করা নির্দেশিকার মাত্র দু’দিন আগে ২৬৫ কোটি টাকা তুলে নেয় গুজরাতের ভাদোদরা স্মার্ট সিটি ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড (ভিএসসিডিএল)। ভদোদরা পুরসভার সঙ্গে যৌথভাবে এই সংস্থাটি বিশেষ উন্নয়মূলক প্রকল্প (এসপিভি) রূপায়ণে কাজ করে। কেন্দ্রর কাছ থেকে স্মার্ট সিটি প্রকল্পের জন্য পাওয়া টাকা ইয়েস ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে রেখেছিল এই ভিএসসিডিএল। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতে ইয়েস ব্যাঙ্কের গ্রাহকদের টাকা তোলার ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দিয়ে আরবিআই-র নির্দেশিকা সামনে আসার ৪৮ ঘণ্টা আগে, মঙ্গলবার ইয়েস ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে তা ব্যাঙ্ক অফ বরোদায় রাখে ভিএসসিডিএল।
যা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে, ইয়েস ব্যাঙ্কের খারাপ পরিস্থিতির কথা কি আগেভাগেই ছড়িয়ে পড়েছিল ঘনিষ্ঠ বৃত্তে?
ভাদোদরা উপ-পুর কমিশনার সুধীর প্যাটেল জানান, স্মার্ট সিটি মিশনের জন্য কেন্দ্রের কাছ থেকে পাওয়া এই অর্থ স্থানীয় ইয়েস ব্যাঙ্ক শাখায় জমা রেখেছিলেন তাঁরা। কিন্তু দু’দিন আগে ইয়েস ব্যাঙ্কের নানা সমস্যার কথা তাদের নজরে আসায় সেই টাকা তুলে নেওয়া হয়।
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন থেকে আরবিআই প্রধান শক্তিকান্ত দাস অভয় দিয়ে জানাচ্ছেন, গ্রাহকদের কোনও চিন্তা নেই, তাঁদের অর্থ সুরক্ষিত আছে ইয়েস ব্যাঙ্কে। কিন্তু মোদী রাজ্যে পুরসভার সঙ্গে কাজ করা সংস্থা ‘সমস্যা’র কথা উপলব্ধি করে তাদের ইয়েস ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে অন্য ব্যাঙ্কে জমা রেখেছে।
সূত্রের খবর, ২০১৭ সাল থেকে ভাদোদরা স্মার্ট সিটি ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের গোড়াপত্তনের সময় থেকেই তাদের সমস্ত অর্থ জমা রাখা হয় স্থানীয় ইয়েস ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে। অন্যান্য ব্যাঙ্কের তুলনায় সুদ কিছুটা বেশি হওয়ায় এই ব্যাঙ্কেই টাকা জমা রাখার সিদ্ধান্ত নেয় তারা। কিন্তু গত বছর নভেম্বরে বিতর্ক শুরু হয় আধ্যাত্মিক গুরু ও সমাজকর্মী জ্যোতিরনাথজির একটি অভিযোগকে কেন্দ্র করে। তিনি মন্তব্য করেছিলেন বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে ইয়েস ব্যাঙ্ক। ওখানে সঞ্চিত অর্থ রাখাটাই ঝুঁকিপূর্ণ। তিনি এও অভিযোগ করেন, গর্ভমেন্ট রেসোলিউশন বা জিআর রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক ছাড়া ১৫ টি বেসরকারি ব্যাঙ্ক গ্যারান্টির প্রতিশ্রুতি দেয়, সেই তালিকায় ইয়েস ব্যাঙ্ক নেই। জ্যোতিরনাথজির অভিযোগ, তা সত্ত্বেও ভিএসসিডিএল ওই ব্যাঙ্কে টাকা রাখছে। এদিকে ভিএসসিডিএল দাবি করেছে গত নভেম্বরেই তাদের টাকা ইয়েস ব্যাঙ্ক থেকে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়। কিন্তু প্রায় তিনমাস পর সেই টাকা ট্রান্সফার হয় ব্যাঙ্ক অফ বরোদায়! তাও আবার আরবিআই-র নির্দেশিকা আসার ৪৮ ঘণ্টা আগে। ভিএসসিডিএলের তরফে অবশ্য দাবি করা হচ্ছে, নতুন ব্যাঙ্কের সঙ্গে আলোচনা করতে গিয়েই ফান্ড ট্রান্সফারে দেরি হয়েছে।

 

Comments are closed.