রজনীকান্ত: দূর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, আমাদের উপর হিন্দি চাপানো যাবে না

অমিত শাহের হিন্দি-মন্তব্য নিয়ে তোপ দেগেছিলেন দক্ষিণের সুপারস্টার কমল হাসান। এবার কড়া প্রতিক্রিয়া দিলেন আরেক তারকা রজনীকান্ত।

এটা ঠিকই, কোনও দেশের একটিই সাধারণ ভাষা থাকলে, তার সুবিধা অনেক। একতা এবং প্রগতির জন্যও এটা ভালো। কিন্তু দূর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, আমাদের দেশে সেটা করা সম্ভব নয়। আপনি কারও উপর অন্য ভাষা চাপিয়ে দিতে পারেন না। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সংযোগকারী ভাষা হিসেবে হিন্দির প্রসার ও প্রসার সংক্রান্ত মন্তব্যে এমনই প্রতিক্রিয়া দিলেন রাজনীতিতে হাত পাকানো দক্ষিণী তারকা অভিনেতা রজনীকান্ত। এখানেই থামেননি তিনি, অমিত শাহের উদ্দেশে তাঁর বার্তা, বিশেষ করে আপনি যদি হিন্দি চাপিয়ে দিতে চান, তাহলে শুধু তামিলনাড়ু নয়, দক্ষিণের কোনও রাজ্যই মানবে না। দেশের উত্তর পূর্বের রাজ্যগুলোও এটা মানবে না।

সম্প্রতি হিন্দি দিবসের অনুষ্ঠানে অমিত শাহ বলেছিলেন হিন্দি সারা ভারতে সংযোগকারী ভাষা হিসেবে কাজ করবে। তাই বেশি করে হিন্দির চর্চার পরামর্শ দেন তিনি। বলেন, দেশের ঐক্য অটুট রাখার একমাত্র মন্ত্র হিন্দির ব্যাপক প্রসার। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই মন্তব্যের পরই তীব্র বিতর্ক শুরু হয়ে যায়। দক্ষিণের রাজ্যগুলো তো বটেই, প্রতিবাদ ধ্বনিত হয় বাংলা থেকেও। পাল্টা হিন্দি ভাষার দেশব্যাপী প্রসারের বিরোধীদের দেশ বিরোধী বলে আখ্যা দেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব

অমিত শাহকে তীব্র আক্রমণ করে রাজনীতিবিদ তথা দক্ষিণী সুপারস্টার কমল হাসান বলেছিলেন, কোনও শাহ, সুলতান বা সম্রাটের মর্জিমাফিক এদেশ চলবে না। ভারতের বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্যে কোপ পড়লে ফের শুরু হবে ভাষা আন্দোলন, হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন কমল হাসান।

প্রথমে কেন্দ্রের মোদী সরকারের উদ্দেশে তোপ দাগেন কমল হাসান। এবার মুখ খুললেন রজনীকান্তও। দক্ষিণ ভারতের উপর হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদ অবশ্য আজকের নয়। দীর্ঘদিন ধরেই মূলত উত্তর ভারতীয় এই ধারণা চাপিয়ে দেওয়ার বিরুদ্ধে মরণপণ লড়াই চালিয়েছে দক্ষিণ ভারত।

এবিষয়ে প্রথম মুখ খোলেন কেরলের বামপন্থী মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। হিন্দি ভারতকে ঐক্যবদ্ধ করে এমন ভাবনা হাস্যকর, বলেছিলেন তিনি। সোমবার কর্ণাটকের বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী ইয়েদুরাপ্পা ঘুরিয়ে অমিত শাহের মন্তব্যের বিরুদ্ধাচারণ করে বলেছিলেন, তাঁর সরকার কোনওভাবেই রাজ্যে কন্নড় ভাষার গুরুত্ব কমানোর রাস্তায় যাবে না। হিন্দি চালুর করতে কন্নড় ভাষার সঙ্গে কোনওরকম আপোশ করা যাবে না, সাফ জানিয়ে দেন বিজেপির এই বর্ষীয়ান নেতা। বিরোধিতা করেছেন পুদুচেরির কংগ্রেস মুখ্যমন্ত্রীও। কড়া সমালোচনার পথে গিয়েছেন তামিলনাড়ুর এম কে স্ট্যালিন। পাশাপাশি অধুনা রাজনীতিবিদ দেশের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেতা রজনীকান্ত এবং কমল হাসানও অমিত শাহের মন্তব্যের বিরোধিতা করায়, কেন্দ্রের অস্বস্তি বাড়ল বলেই মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।

Comments are closed.