মোদী বলেছিলেন, এনআরসি নিয়ে আলোচনা হয়নি! ‘অ-নাগরিকদের চিহ্নিত করতেই এনআরসি দরকার’, সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা কেন্দ্রের

দেশে কে নাগরিক আর কে নাগরিক নন, তা বোঝার জন্যই দরকার এনআরসি। সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল কেন্দ্রের। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে দায়ের হওয়া মামলাগুলোর প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার জমা দেওয়া হলফনামায় এমনই দাবি করেছে অমিত শাহের নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
কোনও সার্বভৌম রাষ্ট্রে নাগরিকদের তালিকা তৈরি করা একটি অত্যন্ত জরুরি অনুশীলন। এবং এটা করতে গিয়ে সমস্ত নিয়মের মধ্যে থেকেও নাগরিক নন এমন মানুষকে প্রথমে চিহ্নিত এবং তারপর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে রাষ্ট্র, হলফনামায় সওয়াল কেন্দ্রের। কিন্তু কেন্দ্রের বক্তব্যে কোথাও ছিল না এনপিআর নিয়ে একটি শব্দও। পয়লা এপ্রিল থেকে যে প্রক্রিয়া শুরু হতে যাচ্ছে গোটা দেশজুড়ে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক হলফনামায় আরও জানিয়েছে, বেআইনি অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করা যে কোনও রাষ্ট্রের কাছেই সার্বভৌম, বিধিসম্মত এবং মানবিক দায়িত্ব পালনের ব্যাপার।
আফগানিস্তান, পাকিস্তান কিংবা বাংলাদেশে নাগরিকদের জন্য পরিচয়পত্রের চল রয়েছে। কিন্তু ভারতে তা নেই। আর এই পরিচয়পত্র না থাকার সুযোগ নিয়েই প্রতিবেশী বিভিন্ন দেশ থেকে মানুষ বেআইনিভাবে ভারতে ঢুকে বসতি গেঁড়েছেন, দাবি কেন্দ্রের। তাঁরা প্রকৃত নাগরিক নন। তাই প্রকৃত নাগরিকের অধিকার সুপ্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যেই এনআরসি প্রক্রিয়া প্রয়োজন বলে মনে করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। সে কথাই হলফনামায় স্পষ্ট করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
শীর্ষ আদালতে এনআরসি নিয়ে জোর গলায় সওয়াল করলেও, সম্প্রতি তা নিয়ে তৈরি হয়েছে এক বিরাট বিভ্রান্তি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রোনোলজি মেনে বারবার এনআরসি আনার কথা বললেও, আচমকাই দিল্লির রামলীলা ময়দানে দাঁড়িয়ে মোদী বলে দেন, এনআরসি নিয়ে তাঁর মন্ত্রিসভায় একবারও আলোচনা হয়নি। ফলে জনমানসে তৈরি হয় বিভ্রান্তি। এই প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টে এনআরসির হয়ে কেন্দ্রের জোর সওয়াল নতুন করে প্রশ্ন তুলে দিল।

Comments are closed.