কোভিড সংক্রমিতের হাসপাতাল থেকে ডিসচার্জের নিয়মে বদল আনল কেন্দ্র! দেখে নিন, নতুন নিয়মে কী আছে?

হাসপাতাল থেকে করোনামুক্ত হয়ে বাড়ি ফিরেও কিছুদিনের মধ্যে আবার কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা বাড়ছে। তার উপর বেশিরভাগ করোনা রোগীই উপসর্গহীন। এই অবস্থায় সংক্রমিত রোগীদের হাসপাতাল থেকে ছাড়ার নিয়মে বেশ কিছু বদল আনল কেন্দ্র। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ বা ICMR এর পরামর্শে ৮ মে নতুন নির্দেশিকা জারি করেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক।

আসুন দেখে নেওয়া যাক, কী আছে সেই নয়া নির্দেশিকায়?

কোভিড-১৯ রোগীদের হাসপাতাল থেকে ডিসচার্জ করার আগের নিয়ম ছিল,

রোগীর চেস্ট রেডিওগ্রাফ নেওয়া হলে এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাঁর দুটি কোভিড টেস্টের রিপোর্ট নেগেটিভ এলে হাসপাতাল থেকে সুস্থ বলে ছেড়ে দেওয়া হত।

করোনা রোগীদের হাসপাতাল থেকে ছাড়ার নতুন নিয়ম বলছে,

এবার থেকে করোনা রোগীদের সংক্রমণ মাত্রা অনুযায়ী তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। উপসর্গহীন, কম এবং মাঝারি করোনা উপসর্গের রোগীর ক্ষেত্রে যদি তিন দিন শরীরে জ্বর না আসে এবং হাসপাতালে ভর্তির ১০ দিনের মধ্যে লক্ষণ বা স্পষ্ট উপসর্গ প্রকাশ না পেলে তাঁকে ডিসচার্জ করে দেওয়া হবে।

মাঝারি সংক্রমিতদের ক্ষেত্রে রোগের পর ১০ দিন কেটে গেলে এবং রোগীর যদি টানা তিনদিন কোনও উপসর্গ না পাওয়া যায় সেক্ষেত্রে তাঁকে ছেড়ে দিতে পারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতাল থেকে ছাড়ার পর সাতদিন রোগীকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে।

গুরুতর আক্রান্তদের ক্ষেত্রে ক্লিনিক্যাল রিকভারি না হওয়া পর্যন্ত এবং করোনা টেস্ট পরপর নেগেটিভ আসার পরই একমাত্র হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাবেন।

 

ডিসচার্জের নিয়মে বদল কেন? 

বহু দেশই করোনা রোগীকে হাসপাতাল থেকে ছাড়ার নিয়মবিধির পরিবর্তন করে চলেছে। এখন ‘টেস্ট বেসড স্ট্র‍্যাটেজি’ থেকে ‘সিম্পটম বেসড স্ট্র‍্যাটেজি’ কিংবা ‘টাইম বেসড স্ট্র‍্যাটেজি’র উপর জোর দেওয়া হচ্ছে সারা বিশ্বেই। এ দেশে করোনা সংক্রমিতদের উপসর্গ, রোগ লক্ষণ ইত্যাদি বিচার করে এই স্ট্র‍্যাটেজি পরিবর্তন করার পরামর্শ দিয়েছে আইসিএমআর।

 

কী দেখে রোগীকে ছাড়া হবে? 

কেন্দ্রের তরফে জানানো হচ্ছে, ফের সংক্রমণ লক্ষণ যদি না দেখা যায়, সেক্ষেত্রে কোভিড ১৯ থেকে সুস্থ হওয়া রোগীকে ছাড়া হবে। যদিও এ নিয়ে বিভিন্ন দেশের চিকিৎসক ও ভাইরোলজিস্টের মতামত এক নয়।

 

হোম আইসোলেশনে থাকার সময় রোগীকে যে যে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে 

কম, মাঝারি উপসর্গ যুক্ত কোভিড রোগীদের ক্ষেত্রে হোম আইসোলেশনে থাকার ক্ষেত্রে তাঁর ক্লিনিক্যাল স্টেটাস ও বাড়িতে থাকার পরিস্থিতি কতটা উপযুক্ত তা খতিয়ে দেখা হবে। সেক্ষেত্রে রোগীকেই জানাতে হবে তিনি হোম আইসোলেশনে থাকার জন্য তৈরি।

কোনও কো-মর্বিডিটি না থাকা রোগীদের হোম আইসেলশনে ট্রিপল লেয়ার মাস্ক পরতে হবে। পরিবারের অন্যান্যদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে হবে বাড়িতে। বিশেষতঃ বাড়ির বয়স্ক সদস্য, যাঁদের হাইপারটেনশন, উচ্চ রক্তচাপ, শ্বাসকষ্টের সমস্যা ইত্যাদি রয়েছে তাঁদের কাছ থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। রোগীকে পরিচ্ছন্নতার দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে এবং নিয়মিত স্বাস্থ্যের হাল জানাতে হবে স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে।

হোম আইসোলেশন পিরিয়ড শেষ হলে ফের কোভিড টেস্টের কোনও প্রয়োজন নেই বলে জানাচ্ছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক।

Comments are closed.