করোনা পরিস্থিতিতে চরম আর্থিক দৈন্যে ভুগছিল মধ্যপ্রদেশের বালাঘাট জেলার কয়েকটি গোন্দ পরিবার। লকডাউন মিটতেই পুজো চলে আসে। এই অবস্থায় দুর্গা পুজো উপলক্ষ্যে ১৭০ টি পরিবারকে ২০১ টাকা করে চাঁদা ধার্য করেছিল স্থানীয় পুজো উদ্যোক্তারা। কিন্তু ১৪টি গোন্দ পরিবার ১০০ টাকার বেশি না দিতে পারেনি। এই পরিবারগুলোকে একঘরে করার অভিযোগ পুজো উদ্যোক্তাদের বিরুদ্ধে।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে রেশন আসেনি বাড়িতে। ১৪ টি উপজাতি পরিবার, দরজা আটকে ঘরে বন্দি। দুঃসহ পরিস্থিতিতে অবশেষে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানালে সবার নজরে আসে এই খবর।
জানা গিয়েছে, বালাঘাটের লামটা গ্রামে ৪০ টি গোন্দ পরিবারের বাস। এদের অধিকাংশই পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে বিভিন্ন শহরে কাজ করতেন। কিন্তু করোনা ও লকডাউন পরিস্থিতিতে দারিদ্র চরমে ওঠে। দুর্গাপুজোয় ২০০ টাকা চাঁদা দেওয়া ১৪ টি পরিবারের কাছে দুঃসাধ্য হয়ে ওঠে। তাই পুজো উদ্যোক্তাদের ১০০ টাকা দিতে চায় তাঁরা। কিন্তু উদ্যোক্তারা সে টাকা নিতে অস্বীকার করে এবং ওই ১৪টি পরিবারকে একঘরে ঘোষণা করে। এক গ্রামবাসীর অভিযোগ, এরপর গ্রামের অন্য বাসিন্দাদের জমিতে ওই পরিবারের কারও গরু-ছাগল চরানো থেকে খেতে কাজ করার উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। গ্রামের প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রবেশ নিষিদ্ধ। গ্রামের কোনও অনুষ্ঠানেই আর ডাক পড়ে না।
বালাঘাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গৌতম সিংহ সোলাঙ্কি জানান, গত বুধবার ১৪টি পরিবারের প্রতিনিধি থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর স্থানীয় লামটা থানার ওসি গেলে উলটে অভিযোগকারীদের হেনস্থা করা শুরু করে গ্রামের কয়েকজন।
ওই ১৪ পরিবারকে একঘরে করার পিছনে থাকা দোষীদের যথোপযুক্ত শাস্তি দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। এই ঘটনায় ব্যাপক আলোড়ন তৈরি হওয়ায় পুলিশি তদন্তের নির্দেশ দিয়ে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন মধ্যপ্রদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।