ভিমা কোরেগাঁও সংঘর্ষের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তিতে শ্রদ্ধা জানালেন মহারাষ্ট্রের উপ মুখ্যমন্ত্রী, এখনও জেলবন্দি মানবাধিকার কর্মীরা

ভিমা কোরেগাঁওয়ের (Bhima Koregaon) বর্ষপূর্তি। ২ বছর আগে ঘটা হিংসার ঘটনার কথা মাথায় রেখে এবার কার্যত নিরাপত্তার বেড়াজালে মুড়ে ফেলা হয়েছিল গোটা চত্বর। বুধবার সকালে ভিমা কোরেগাঁও মিনার এলাকায় গিয়ে যুদ্ধে নিহতদের স্মৃতির উদ্দেশে শ্রদ্ধা জানান মহারাষ্ট্রের উপ মুখ্যমন্ত্রী অজিত পওয়ার এবং নেতা প্রকাশ আম্বেডকর। সেখানকার বেশ কিছু ছবিও পোস্ট করেন অজিত পওয়ার।

এলাকায় শান্তি বজায় রাখারও আহ্বান জানিয়েছেন রাজ্যের উপ মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, এই স্তম্ভের একটি নিজস্ব গৌরবের ইতিহাস আছে। প্রতি বছরই এখানে লক্ষ লক্ষ মানুষ শ্রদ্ধা জানাতে হাজির হন। ২ বছর আগে একটি দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটেছিল। কিন্তু এবার সরকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বদ্ধপরিকর। আমি জানি, এখানে উপস্থিত লক্ষ লক্ষ মানুষও হিংসাকে সমর্থন করেন না।
২০১৮ সালের পয়লা জানুয়ারিতেই মহারাষ্ট্রের ভিমা কোরেগাওয়ে পেশোয়া বাজিরাওয়ের বিরুদ্ধে ইংরেজদের যুদ্ধ জয়ের উৎসব পালন চলছিল। তখনই হিংসার ঘটনা ঘটে। যাতে মৃত্যু হয় একজনের এবং একাধিক গাড়ি বাইক পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
বছরের প্রথম দিন ভিমা কোরেগাঁওয়ে (Bhima Koregaon) দলিত সম্প্রদায়ের মানুষেরা এসে ইংরেজদের যুদ্ধ জয়ের স্মৃতি রোমন্থন করেন। ১৮১৮ সালে দলিতদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় ইংরেজরা পেশোয়ার সৈন্যদের পরাস্ত করতে পেরেছিল। দলিতদের এই যুদ্ধকে ইদানীং মারাঠা বিরোধী বলে দাবি করার চল শুরু হলেও, বস্তুত মারাঠা নয় বরং ব্রাহ্মণদের বিরুদ্ধে দলিত সম্প্রদায়ের মানুষের এই মরণপণ যুদ্ধকেই প্রতিবছর ১ জানুয়ারি স্মরণ করেন মানুষ।
অভিযোগ ২০১৮ সালে মহারাষ্ট্রের উগ্র হিন্দুত্ববাদী নেতাদের উসকানিতেই গোলমালের সূত্রপাত। পরে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে দুই পক্ষই। মৃত্যু হয় এক দলিত যুবকের। বেশ কয়েকটি গাড়িতে আগুন দেন বিক্ষোভকারীরা। তদন্তে নেমে পুলিশ দাবি করে, এই ঘটনার পিছনে রয়েছে মাওবাদী চক্রান্ত। পুলিশ আরও দাবি করে, মাওবাদীরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে হত্যা করে ক্ষমতা দখলের পরিকল্পনা কষেছে। যদিও এমন কোনও প্রমাণই এখনও পর্যন্ত আদালতে হাজির করতে পারেনি পুণে পুলিশ। তবে ভিমা কোরেগাঁও হিংসায় যুক্ত থাকার অভিযোগে এখনও জেলবন্দি কবি ভারাভারা রাও, সমাজকর্মী সোমা সেন, ভার্নন গঞ্জালভেস, অরুণ ফেরেরারা। যদিও উগ্র হিন্দুত্ববাদী নেতা মিলিন্দ একবোটে ও সম্ভাজি ভিডের বিরুদ্ধে হিংসার অভিযোগ থাকলেও, তাঁদের গ্রেফতার করেনি পুলিশ। তবে মামলায় যুক্ত সব পক্ষকে পুণে পুলিশের তরফে নোটিস জারি করা হয়েছিল।

Comments are closed.