বাংলা জয়ে মোদী-অমিত শাহের ভরসা এই প্রাক্তন ব্যাঙ্ক কর্তা! চেনেন বিজেপি আইটি সেল চিফ অমিত মালব্যকে?

২১ এর ভোটকে পাখির চোখ করে আইটি সেলের প্রধানকে বাংলার দায়িত্ব দিয়ে কলকাতা পাঠাচ্ছে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। কৈলাস বিজয়বর্গীয়কে সাহায্য করবেন অমিত মালব্য। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, তৃণমূলের নির্বাচনী স্ট্র‍্যাটেজিস্ট প্রশান্ত কিশোরের সংস্থার প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বিজেপির আইটি সেলের প্রধান মালব্যের উপর বিশেষ দায়িত্ব সঁপেছেন জেপি নাড্ডা, অমিত শাহরা। 

জানেন কে এই অমিত মালব্য, যিনি ব্যাঙ্কার থেকে জীবন শুরু করে মোদী- শাহদের আস্থার পাত্র হয়ে উঠেছেন?

ট্যুইটার, ফেসবুক সহ সোশ্যাল মিডিয়ায় বারংবার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকেন মালব্য। বিজেপির আইটি সেলের প্রধানের বিভিন্ন পোস্ট নিয়ে যেমন বিরোধীরা ফেক নিউজ ছড়ানোর অভিযোগ করেন, তেমনি কিছু বিজেপি নেতাও প্রকাশ্যে তাঁর তীব্র সমালোচনা করেন।Huffington Post এর এক প্রতিবেদনে অমিত মালব্যকে ‘বিজেপির সবচেয়ে বড় বোঝা’ বলে ব্যঙ্গ করা হয়েছিল। তা নিয়ে বিতর্ক কম হয়নি।  

উত্তর প্রদেশের ছেলে অমিত মালব্য আগ্রার দয়ালবাগ এডুকেশনাল ইনস্টিটিউট থেকে বিবিএম পাশ করেন। তারপর ২০০০ সালে পুণের সিমবায়োসিস ইনস্টিটিউট অফ  ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ থেকে পোস্ট গ্র‍্যাজুয়েট ডিপ্লোমা করেন তিনি। তাঁর কর্মজীবন শুরু হয় আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের মুম্বই এলাকার অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার হিসেবে। সেখানে দেড় বছর কাজ করে একটি সংস্থার বিজনেস অ্যানালিস্ট হিসেবে যোগ দেন অমিত মালব্য। এরপর HSBC ব্যাঙ্কের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রায় সাত বছর এবং পরে ব্যাঙ্ক অফ আমেরিকার গ্লোবাল ট্রেজারি সেলস, দক্ষিণ শাখার ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে বেশ কিছুদিন কাজ করেছেন। এরমধ্যে ২০১৫ সালে বিজেপির সঙ্গে অমিত মালব্যের হঠাৎই যোগাযোগ হয়। আর সেখান থেকে দিল্লিতে বিজেপির আইটি হেডের দায়িত্ব পান তিনি। তবে অনেকের মত, অমিতের বিজেপি যোগ বহু পুরনো। ২০০৯ সালের দিকে বিজেপি যখন সমাজের বিশিষ্টদের দলে টানতে ‘ফ্রেন্ডস অফ বিজেপি’ নামে ক্যাম্পেন শুরু করে, তার অন্যতম আহ্বায়ক ছিলেন মালব্য। বিজেপির আইটি সেলের প্রধান হিসেবে বহু সোশ্যাল মিডিয়া ক্যাম্পেনিং করা এই প্রাক্তন ব্যাঙ্কারের হাত ধরে দেশের যুব সমাজের সঙ্গে যেমন দারুণ যোগাযোগ গড়ে তোলে বিজেপি। তেমনি মালব্যের একাধিক পোস্ট, ক্যাম্পেন নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে বহু বিতর্ক। ফেক নিউজ ছড়ানো, রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতা তৈরি, সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভেদ তৈরির মতো অভিযোগ উঠেছে। নির্বাচন কমিশনের ঘোষণার আগেই কর্ণাটক বিধানসভা ভোটের নির্ঘণ্ট প্রকাশ করা, শাহিনবাগের সিএএ আন্দোলন নিয়ে ফেক ভিডিও ছড়ানোর অভিযোগ, স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রীকে ব্যভিচারী প্রমাণ করতে বিতর্কিত ছবি পোস্ট, এরকম অজস্র বিতর্কে জড়িয়েছেন অমিত মালব্য। কিছুদিন আগে বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী অভিযোগ করেন, দলের গঠনমূলক সমালোচনা করে তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু পোস্ট করলেই কমেন্ট বক্সে ভুয়ো অ্যাকাউন্টধারীরা ব্যঙ্গ করতে পৌঁছে যায়। সরাসরি দলের আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্যের বিরুদ্ধেই অভিযোগ এনেছিলেন তিনি। সেই অভিযোগ যে ধোপে টেকেনি তা স্পষ্ট, জানাচ্ছেন অমিত মালব্যের অনুগামীরা। বাংলা জয়ে মালব্যতেই আস্থা রেখে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বই তা বুঝিয়ে দিল বলে দাবি তাদের।

Comments are closed.