করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও বিপুল মুনাফার মুখ দেখল মুকেশ আম্বানীর রিলায়েন্স

প্রথম ত্রৈমাসিকে রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের মুনাফা ১৩,২৪৮ কোটি টাকা। নেট প্রফিট বৃদ্ধি ৩১ শতাংশ এবং শুধু জিও থেকে লাভ ২ হাজার ৫২০ কোটি টাকা!

করোনা পরিস্থিতির মধ্যে একের পর এক বিনিয়োগ এসেছে রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের মালিক মুকেশ আম্বানীর ঝুলিতে। রাইটস বা সত্ত্ব ইস্যুর মাধ্যমে ২১২,৮০৯ কোটি টাকা তুলেছে রিলায়েন্স। আর প্রথম ত্রৈমাসিকে RIL-এর মোট রাজস্ব দাঁড়িয়েছে ৮৮ হাজার ২৫৩ কোটি টাকা।

করোনার প্রভাবে সারা দেশের অর্থনীতি টালমাটাল। কিন্তু কোভিড পর্বেও মুকেশের রিলায়েন্স জিও, রিটেল এবং অয়েল টু কেমিক্যাল ব্যবসায় বিশাল লাভ করেছে৷ এমন পরিস্থিতিতে যা আশাতীত। এপ্রিল থেকে জুন, এই তিনমাসে শুধু জিও থেকে মুকেশ আম্বানীদের আয়ের পরিমাণ ২ হাজার ৫২০ কোটি টাকা। সর্বোপরি প্রথম ত্রৈমাসিকে রিলায়েন্সের মোট লাভ হয়েছে ১৩ হাজার ২৪৮ কোটি টাকা৷ গত অর্থবর্ষে একই সময় তাদের লাভের পরিমাণ ছিল ১০ হাজার ১০৪ কোটি টাকা ৷ মুকেশের সংস্থার  year-on-year মুনাফার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩০.৯৭ শতাংশ৷

রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান মুকেশ আম্বানীর কথায়, বিশ্বজুড়ে লকডাউনের কারণে চাহিদা তীব্রভাবে হ্রাস পেয়েছে। যা আমাদের হাইড্রোকার্বন ব্যবসায় ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে৷ যদিও আমাদের কোম্পানির সামগ্রিক কাজের মাধ্যমে উৎপাদন স্বাভাবিক থেকেছে। এই কারণে আমাদের সংস্থা আপাতত সেরা।

প্রায় সব দিকেই লাভের মুখ দেখেছে মুকেশ আম্বানীর রিলায়েন্স।

২০২০ সালে জুন কোয়ার্টারে রিলায়েন্সের কনসলিডেটেড প্রফিট ১০২.৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। নিফটি স্টকেও সবথেকে বেশি লাভ করেছে রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ৷ গত মার্চে তেলের দর পড়ে যাওয়ায় রিলায়েন্সের ৪,২৬৭ কোটি টাকা ক্ষতি হয়। কিন্তু কোভিড পরিস্থিতির মধ্যে সেখান থেকেও ব্যাপক লাভ করেছে রিলায়েন্স। কোম্পানির EBITDA মার্জিন ১৯.১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে ৷ এই ত্রৈমাসিকে রিলায়েন্সের consolidated revenue দাঁড়িয়েছে ১ লক্ষ ৯২৯ কোটি টাকা ৷

পাশাপাশি অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে বিপুল লাভের মুখ দেখেছে রিলায়েন্স জিও। ত্রৈমাসিকে নেট প্রফিট ১৮৩ শতাংশ বেড়ে মুনাফার অঙ্ক দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৫২০ কোটি টাকা। গতবছর যে লাভের পরিমাণ ছিল মাত্র ৮৯১ কোটি টাকা। রিলায়েন্স জিও-র Average Revenue Per User (ARPU) ৭.‌৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। কোম্পানির আশা ছিল এই বৃদ্ধির পরিমাণ হবে ৩.‌৫ শতাংশ। ওয়ার্ক ফ্রম হোম চালু হওয়ায় সারা দেশেই এখন মোবাইল ডেটার প্রয়োজন বেড়েছে। তাই কোভিড পরিস্থিতিতে ব্যাপকভাবে ব্যবসা বৃদ্ধি পেয়েছে জিও-র। এখনও পর্যন্ত ১৩ টি বিনিয়োগকারী সংস্থা মোট ১ লক্ষ ৫২ হাজার ৫৬ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে রিলায়েন্স জিও-য়।

তাছাড়াও রিলায়েন্স রিটেল থেকে এই ত্রৈমাসিকে সংস্থার আয় হয়েছে ৩১ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা। রিটেল EBIT দাঁড়িয়েছে ৭২২ কোটি টাকায়।

বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জে বৃহস্পতিবার রিলায়েন্সের শেয়ার দর ০.৬১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে বাজার বন্ধের সময় শেয়ার প্রতি দাম হয়েছিল ২,১০৮.৬৫ টাকা। ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জে বাজার বন্ধের সময় ০.২৫ শতাংশ বেড়ে রিলায়েন্সের প্রতি শেয়ারের দাম দাঁড়ায় ২,১০১.৯০ টাকা।

Comments are closed.